বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

অপচিকিৎসা, ভুয়া ডাক্তারদের দৌরাত্ম : বাড়ছে প্রাণহানি

প্রকাশিত: ১৯ অক্টোবর ২০১৯  

যুগের চিন্তা রিপোর্ট : ফার্মেসী বটে ! ফার্মেসীতেই অপারেশন চলে। চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারি এ ঘটনার ঘটনাস্থল খুব বেশি দূরে নয়। ফতুল্লার এনায়েতনগর ইউনিয়নের মুসলিমনগরে। এখানে নবজাতকটি মারা গেছে। শুধু মুসলিমনগর নয় রূপগঞ্জ ও সোনারগাঁ এলাকাতেও প্রসূতি, নবজাতক ও রোগীর মৃত্যু ঘটেছে।

 

একই দিনে তিনটি অপমৃত্যুর ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল নারায়ণগঞ্জ জেলায় প্রসূতি মা এবং অন্যান্য রোগীরা কতটা অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন। মহল্লার ধাত্রী থেকে শুরু করে অপেশাদার দাইমা, নার্স, ভূয়া ডাক্তার এমনকি প্রতিষ্ঠিত ক্লিনিক হাসপাতালে ও পেশাদার এবং স্বনামধন্য চিকিৎসকের হাতে রোগী মারা যাচ্ছে।

 

কোন খানেই প্রসূতি মা ও অন্যান্য রোগী নিরাপদ নয়। দিনের পর দিন  জেলাজুড়ে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা ও অডাক্তারদের কার্যক্রম চললেও  কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়না  জেলা সিভিল সার্জন অফিসের পক্ষ থেকে। পত্রিকায় সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও সিভিল সার্জন দ্রুত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না-এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তাদের মতে, মহল্লা পর্যায়ে অপচিকিৎসার  যে জাল বিস্তৃত সে জাল বিচ্ছিন্ন করতে  কোন পদক্ষেপ না হয়না।

 

শহরের ক্লিনিক হাসপাতালে রোগী বা নবজাতক মারা গেলে  কোন মতে ঘটনা ধামাচাপা দেয়া হয়। ঘটনাগুলিতে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়না। এদিকে, গত মাসে র‌্যাব ও পুলিশের অভিযানে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় অন্তত ১০ জন ভূয়া ডাক্তার  গ্রেফতার হয়েছে। শহরের হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে চলছে যাচ্ছে তাই কারবার।

 

এ বিষয়ে সিভিলসার্জন কতটা ওয়াকিবহাল এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন- তা জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে ফার্মেসী ও হাসপাতালগুলো মনিটরিং করার  বিষয়ে সব সময় মাঠে লোক রয়েছে।  তবে কিছু কিছু এলাকায় ঘটনা ঘটলেও অনেক সময় তা গোপন করা হয়ে থাকে।

 

ফলে অনেক সময় ব্যবস্থা নেয়া যায় না। যদি কোন প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। ইতিপূর্বে জেলা সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি ক্লিনিকও সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।  খুব শিঘ্রই অবৈধ ফার্মেসীসহ ক্লিনিকগুলোতেও অভিযান পরিচালনা করা হবে।  


ফার্মেসীতে গর্ভবতীর অপারেশন :

কোন রকম অপারেশন করার অনুমতি নেই তাদের। কিন্তু তার পরেও তারা গর্ভবতী মহিলাদের সিজার করান। এলএমএএফ সার্টিফিকেটের উপর ভরসা করে অনেকেই করছেন সিজারের মতো গুরুত্বপূর্ন অপারেশনও। হতদরিদ্র পরিবারের মানুষকে বিভিন্ন ভুলভাল বুঝিয়ে গর্ভবতী নারীদের সন্তান প্রসব করান।

 

গত ১০ অক্টোবর ফতুল্লার মুসলিম নগর নয়াবাজারে একজন সন্তান সম্ভবা নারীকে জনপ্রিয় ফার্মেসী নামক ঔষধের দোকানে সিজার করে বাচ্চা প্রসব করানো হয়।  ফার্মাসিষ্ট রহিম তার স্ত্রী ও একজন ভাড়া করা নার্সকে দিয়ে ঐ নারীকে অপারেশন করায় বলে অভিযোগ ।  ১১ অক্টোবর শিশুটি মৃত্যু বরণ করে।

 

বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গত কয়েকদিন যাবৎ একটি পক্ষ চেষ্টা তদ্বির চালিয়ে আসছিল। অবশেষে মুসলিম নগর আদর্শ পাঠাগারে গতকাল একটি পক্ষ নিহত শিশুর বাবা ইউনুস ও ফার্মেসীর মালিক রহিমের সাথে আপোষ করিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।


একাধিক সূত্রে জানাগেছে, ফতুল্লার মুসলিম নগর  নয়াবাজর এলাকা। এই এলাকায় বিসিক শিল্প নগরীর বেশিরভাগ শ্রমিকের বসবাস। নয়াবাজার এলাকাকে ঘিরে কমপক্ষে ১০/১৫ টি ফার্মেসী গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে দাঁতের ডাক্তারসহ সন্তান সম্ভবা নারীকে অপারেশনও করা হয় কয়েকটি ফার্মেসীতে।

 

গত ১০ অক্টোবর দুপুরে মুসলিম নগর নয়াবাজারস্থ জনপ্রিয় ফার্মেসীতে এসেছিলেন ইউনুস মিয়ার গর্ভবতী স্ত্রী। এসময় ফার্মেসীর মালিক রহিম ঐ নারী ও তার আত্মীয় স্বজনদের বিভিন্ন কথা বলে তাকে সিজার করার জন্য পরামর্শ দেয়। সহজ সরল ইউনুসের পরিবার রহিম ও তার স্ত্রীর কথায় ফার্মেসীর মধ্যেই সিজারের জন্য সম্মতি দেয়।  ঐদিন রাতে রহিম ও তার স্ত্রী একজন নার্সকে তাদের বাড়িতে আনে।

 

এরপর রহিমের নির্দেশনায় ঐ নারীর অপারেশন  চলে ফার্মেসীর মধ্যে। অপারেশনে অংশ নেয় রহিমের স্ত্রী ও একজন ভাড়াটিয়া নার্স।  সন্তান প্রসব করানোর সময় ঐ শিশুটির ঘাড়ের রগে আঘাত পায়। এছাড়াও গর্ভবতী  নারীরও অপারেশনের পর অসুস্থতা বোধ করছিলেন। শিশুটির অবস্থা বেগতিক দেখে ফার্মেসীর মালিক রহিম  শিশুটি বাবা ইউনুসকে ফোন করে জানায় শিশু ও তার মায়ের অবস্থা আর্শকাজনক।

 

সেই রাতেই মা ও শিশুকে ফতুল্লার মোস্তাফিজ সেন্টারে ভর্তি করানো হয়। শিশুটির শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসকরা তাকে মাতুয়াইল হাসপাতালে রেফার্ড করে।  মাতুয়াইল হাসপাতালে নেয়ার পর,সেখান থেকে মা ও শিশুকে ঢাকা  মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে কর্তব্যরত চিকিৎসক।


মাতুয়াইল থেকে রেফার্ড করা শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিতে বাধা দেয় ফার্মসিষ্ট আব্দুর রহিম। এরপর তাদেরকে মাতুয়াইল শিশু হাসাপাতালের পাশে ফ্রেন্ডশিপ স্পেশ্যালিষ্ট হসপিটালে নেয়া হয়। গত ১১ অক্টোবর রাতে শিশুটি পৃথিবীর আলো থেকে  চিরতরে বঞ্চিত হয়ে মৃত্যু বরণ করে। মাতুয়াইলস্থ ফ্রেন্ডশিপ স্পেশালিষ্ট হসপিটাল ডায়াগনষ্টি সেন্টারের মৃত্যু সনদে,প্রসবকালীন সময়ে শিশুটির ঘাড়ে আঘাতের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।


শিশু মৃত্যুর সংবাদে যখন মুসলিম নগর এলাকায় চলছিল তীব্র প্রতিক্রিয়া,ঠিক তখনই একটি চক্র  ফার্মসিষ্ট রহিমের পক্ষ নেয়। এ বিষয়ে মুসলিম নগর আদর্শ পাঠাগারে বৃহস্পতিবার সকালে জনপ্রিয় ফার্মেসীর মালিক আব্দুর রহিম ও নিহত শিশুটির পরিবারের মধ্যে একটি আপোষ মিমাংসার  উদ্যোগ নেয় একটি পক্ষ। এরপর উভয়ের মধ্যে আপোষ করে দেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র। এনিয়েও এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।


রূপগঞ্জে প্রসূতির মৃত্য :

রূপগঞ্জে ভুলতা জেনারেল হাসপাতালে ফাতেমা বেগম নামে এক প্রসূতীর মৃত্যর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার গভীর রাতে উপজেলার ভুলতা-গাউসিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জের ধরে উত্তেজিত এলাকাবাসী হাসপাতালে হামলা চালিযে ভুংচুর করে ও পরে ঢাকা সিলেট মহাসড়কে অবরোধ করে হাসপাতালটি বন্ধের দাবী জানায়।

 

নিহত ফাতেমার আক্তারের স্বামী রাকিব মিয়া জানান, ফাতেমার ডেলিভারী হওয়ার সময় ঘনিয়ে আসলে বুধবার বিকালে আমরা তাকে ভুলতা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানেকার কর্তব্যরত ডা. সালমা বেগম তার জন্য এক্সে-রে, আল্ট্রা ও রক্ত পরিক্ষা করতে বলেন। পরে ডাক্তারের পরামর্শে আমরা পরিক্ষা গুলো করাই।

 

পরিক্ষার রিপোর্ট দেবে ডা. সালমা বেগম জানান ফাতেমাকে সিজার করাতে হবে। পরে ডাক্তারের পরামর্শে আমরা তার সিজার করাতে বলি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে সিজার সম্পন্ন হয়ে একটি কণ্যা শিশুর জন্ম দেয় ফাতেমা। সিজারের পর থেকে আমার স্ত্রী ফাতেমাকে দেখতে চাইলে আমাদেরকে দেখতে দেয়া হয়নি। পরে তিনি আমাদের না জানিয়ে তড়িঘরি করে চলে যান। এভাবে প্রায় ২ ঘন্টা কেটে গেলেও আমার স্বীকে দেখতে পারিনি।

 

হঠাৎ হাসপাতালের ষ্টাফদের দৌড়াদৌড়ী দেখে আমাদের মনে সন্দেহ হলে আমরা জোড় করে তাকে দেখতে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি ভুলবশত তার নার্ভ কেটে ফেলেছে ডাক্তার। ফলে ফাতেমার অতিরিক্তি রক্তক্ষরণ হয়। অবস্থার বেগতিক দেখে আমরা ডা. সালমাকে ফোন দিলে তিনি দুরে আছেন বলে নানা তালবাহানা করেন। পরে তার অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকলে রাত ১০টার দিকে হাসপাতাল থেকে তাদেরকে রিলিজ দেয়া হয়।

 

পরে আমরা মা ও শিশুকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ভোর ৪টার দিকে সেখানে ফাহেমার মৃত্যু হয়। নিহত ফাতেমার বাবা জানান, ডা. সালমার ভুল চিকিৎসায় আমার একমাত্র মেয়ে ফাতেমা আক্তারের মৃত্যু হয়। ইতিপূর্বে এ ডা. সালমার ভুল চিকিৎসায় আরো অনেক রোগী মারা গেছে।

 

তার কোন বিচার না হওয়ায় আজ আমাদেরকে এমন দিন দেখতে হলো। টাকার লোভে ডাক্তার নামের এই কসাই যেন আর কোন মায়ের বুক খালি করতে না পারে তার জন্য আমরা ফাহেমা হত্যার বিচারের দাবী জানাই। এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদুল হাসান জানান, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।


সোনারগাঁয়ে রোগী মৃত্যু :

সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় পুরাতন সেবা জেনারেল হাসপাতাল নামে এ ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। পিত্তথলিতে ব্যথা নিয়ে বিকেলে ভর্তি হওয়া রোগী মালেকা আক্তারের মৃত্যু হয়। পরে মালেকা আক্তারের ক্ষুব্ধ স্বজনরা হাসপাতাল ভাংচুর না করলেও ডাক্তারের ভুল চিকিৎসাকে দায়ি করে হাসপাতালটি অবরোধ করে রাখে।

 

এসময় হাসপাতালের সামনে উত্তেজনা বিরাজ করে। ঘটনার খবর পেয়ে সোনারগাঁ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে হাসপাতাল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর আগেও সোনারগাঁয়ের দুটি হাসপাতালে দুজন রোগী মারা যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পরে অভিযান চালিয়ে ৬টি হাসপাতাল সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়ে ছিলেন সিভিল সার্জন ডা.ইমতিয়াজ।

 

জানা যায়, উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের রুহুল আমিনের স্ত্রী মালেকা আক্তার পিত্তথলিতে পাথর অপসারণের জন্য বৃহস্পতিবার সকালে মোগরাপাড়া চৌরাস্তার রহমত ম্যানসনের সেবা জেনারেল হাসপাতাল নামের ক্লিনিকে ভর্তি হন।  সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র সার্জারি কনসাল্ট্যান্ট রিয়াজ মোর্শেদের তত্ত্ববধানে ভর্তি হওয়ার পর বিকেল তিনটার দিকে ওই রোগীর অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়।

 

রোগীর স্বজনরা রোগীর অবস্থা জানতে চাইলে অপসারিত পিত্তথলী পাথর এনে দেখিয়ে রোগী ভাল আছেন বলে জানান। এক পর্যায়ে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই ডাক্তার রোগীকে আইসিওতে রাখতে হবে বলে জানান স্বজনদের। ডাক্তারের কথা শুনে আতংকিত হয়ে ওই রোগীর ফুফু সাবিকা পারভীন জোরপূর্বক অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে রোগীর মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছে দেখতে পান।

 

পরে রোগীকে ইকরাম নামের এক ডাক্তারের মাধ্যমে সিদ্ধিরগঞ্জ প্রি অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার রোগীকে মৃত ঘোষনা করলে সঙ্গে থাকা সেবা জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার ইকরাম ওই রোগীকে রেখে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর রোগীর স্বজনরা রাতে উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালে গিয়ে ভাংচুরের চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।


সেবা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. দেবব্রত দাস জানান, অপারেশনের পর অজ্ঞান করার জন্য এনেসথ্যাসিয়ার মাত্রা কম বা বেশি হওয়ার কারনে রোগীর অবস্থা এমন হয়েছে। রোগীকে ঢাকা  মেডিকেলে রেফার করেছিলাম। পথের মধ্যে রোগী মারা যান। তবে ডাক্তার বা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কোন ত্রুটি নেই বলে তিনি দাবি করেন।

 

সেবা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ড. নুরে আলম বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। ডাক্তারের অবহেলায় যদি রোগীর মৃত্যু হয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি সুপারিশ করবো। সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হালিমা খাতুন হক বলেন, ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি তদন্ত করে ডাক্তারের দোষ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, নারায়ণগঞ্জ একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা। এখানে স্বাস্থ্য বিভাগে  জেলার চিকিৎসা কার্যক্রম নিয়মিত দেখভাল করার জন্য আরো চৌকষ কর্মকর্তা প্রয়োজন। বর্তমান সিভিল সার্জন অদৃশ্য সূতোর টানে পেরে উঠছেন না।  জেলাজুড়ে অপচিকিৎসার জাল দিনে দিনে বিস্তৃত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠিত ক্লিনিক-হাসপাতালে কোন অঘটন ঘটলে প্রয়োজনীয় তদন্ত হয়না।

 

অনৈতিকতার হাতছানিতে ধামাচাপা পড়ে অঘটনগুলো। শহর ও শহরতলীতে বেড়েছে ভূয়া ডাক্তারদের দৌরাত্ম। সিভিল সার্জন অফিস যেখানে পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে আসছে- সেখানে সাফল্য দেখাচ্ছে র‌্যাব ও পুলিশ। গত একমাসে র‌্যাব-পুলিশের অভিযানে অন্তত ১০ জন ভূয়া চিকিৎসক  গ্রেফতার হয়েছে। অথচ সিভিল সার্জন এ ব্যাপারে রহস্যজনকভাবে নিরব। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে শহরবাসীকে।

 

এই বিভাগের আরো খবর