শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মালয়েশিয়ার অভিবাসী আটককেন্দ্রে দুই বছরে শতাধিকের মৃত্যু

প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গত দুই বছরে মালয়েশিয়ার অভিবাসী আটককেন্দ্রে শতাধিক বিদেশির মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন রোগ ও অজ্ঞাত কারণে এরা মারা গেছে। মালয়েশিয়ার মানবাধিকার কমিশনের কাছ থেকে পাওয়া নথির বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।এর আগে কখনো এ ধরণের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেনি মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ। দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মানবাধিকার কমিশন তাদের এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এতে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে ৮৩ জন এবং ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে আটক কেন্দ্রে। মালয়েশিয়ার মানবাধিকার কমিশন সুহাকাম জানিয়েছে, ২০১৫ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত আটককেন্দ্রগুলোতে মারা যাওয়া ১১৮ জনের মধ্যে ৬৩ জনই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা। এর পরেই আছে বাংলাদেশের অবস্থান। ওই সময়ে ১৭ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে এই আটককেন্দ্রগুলোতে। এছাড়া ইন্দোনেশিয়ার ১০ জন, ভারতের সাতজন, পাকিস্তানে চারজন, নাইজেরিয়া,নেপাল ও থাইল্যান্ডের তিনজন করে রয়েছে এই তালিকায়। সুহাকামের আট কমিশনারের একজন জেরাল্ড জোসেফ জানিয়েছেন, তিনি কয়েকটি আটককেন্দ্র পরিদর্শণ করেছেন। সেগুলোর অবস্থা শোচনীয়। এই মৃত্যুর ঘটনা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করা উচিৎ। বাজে স্যানিটেশন ও খাদ্য , শারীরিক নির্যাতন ও ওষুধের অভাবে অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে।বার্তা সংস্থা রয়টার্স আটককেন্দ্রগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া কয়েকজন রোহিঙ্গা শরণার্থীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে। তাদের অভিযোগ, সেখানে পর্যাপ্ত খাদ্য ও পানীয় অথবা স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায় না। অনেক বন্দী চামড়া ও ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছে। অসুস্থদের পৃথক করে না রাখায় অন্যদের দেহে রোগের সংক্রমণ ঘটছে। এছাড়া নিরাত্তা প্রহরীরা বন্দীদের মারধর করতো বলেও জানিয়েছেন এসব সাবেক বন্দী। এদেরই একজন নেগেরি সিম্বিলানের একটি ক্যাম্পে আটক ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, বন্দীদের মারধর করা হতো এবং আহতদের চিকিৎসা না করায় তাদের মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়তে তিনি নিজের চোখে দেখেছেন। এমনকি ওষুধের কথা বললেও তাদের পেটানো হতো বলে অভিযোগ করেন ওই ব্যক্তি।মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য বন্দী মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করেছে। এর জন্য তারা আটককেন্দ্রগুলোর জন্য সরকারের বাজেট স্বল্পতাকে দায়ী করেছে। উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নুর জাজলান মোহাম্মদ বলেছেন, ‘ আমি স্বীকার করছি কিছু আটককেন্দ্রে অতিরিক্ত বন্দী রয়েছে এবং সেখানকার পরিবেশ ভালো নয়। আমরা সবসময় চেষ্টা করছি এসব কেন্দ্রের নিয়ম, স্বাস্থ্যসেবা ও ব্যবস্থাপনা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে। তবে সমস্যা হচ্ছে আমাদের বাজেট স্বল্পতার মু্খোমুখি হতে হচ্ছে।’
এই বিভাগের আরো খবর