মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

নাটোরে হঠাৎ বৃষ্টিতে স্বস্তি-অস্বস্তিতে কৃষক

প্রকাশিত: ৪ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ৪ মার্চ ২০১৭

যুগেরচিন্তা ২৪.কম: নাটোরে ভোর থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে উত্তরের হিমেল হাওয়া। ফলে মাঘের শীত যেন ফাল্গুনে জেঁকে বসেছে। ফসলের মাঠে স্বস্তি-অস্বস্তিতে আছেন কৃষকরা। শনিবার (০৪ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পুরো আকাশ হালকা মেঘে ঢাকা ছিল, কোথাও সূর্যের দেখা মেলেনি।কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বৃষ্টিপাতের কারণে উঠতি গম, সরিষা ও মশুরের জন্য কিছুটা বিপত্তি ঘটলেও এ বৃষ্টি কৃষি ও কৃষকের জন্য আশির্বাদ। বিশেষ করে আম, লিচু, ভুট্টা, রসুন, পেঁয়াজ এবং বোরো ধানের জন্য এ বৃষ্টি খুবই উপকারী।নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে  জানান, যে সব কৃষক দেরিতে গম, সরিষা ও মশুর চাষ করেছেন, তাদের জন্য এ বৃষ্টিপাত সামান্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। কিন্তু সার্বিকভাবে অন্য ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না।অধিকাংশ কৃষক তাদের চাষকরা গম, সরিষা ও মশুর ঘরে তুলেছেন। এসব ফসলের অবস্থা ক্ষতির পর্যায়ে নেই।তিনি বলেন, পুকুর বা ভুগর্ভস্থ পানির চেয়ে বৃষ্টির পানি ফসলের জন্য ভালো। কারণ এ পানিতে নাইট্রোজেনের পরিমাণ বেশি থাকে। বৃষ্টির পানিতে রোগ-বালাই থেকে মুক্ত থাকে ফসল।বৃষ্টিপাতের পরপরই আকাশ পরিষ্কার হয়ে রোদ হলে ফসলের জন্য অনেক ভালো। কিন্তু আকাশে দুই/তিনদিন যদি মেঘলা অবস্থা বিরাজ করে, তাহলে ফসলের জন্য ক্ষতিকর। তবে আপাতত এ বৃষ্টিপাত ফসলের জন্য আশির্বাদ বলে জানান তিনি।এদিকে, হালতি বিলের কৃষক কাউছার আলী বাংলানিউজকে জানান, এ সময়ে বৃষ্টি হলে ভুগর্ভস্থ পানির স্তর ভালো থাকবে, ফসলের রোগ-বালাই কম হবে এবং বোরো জমিতে সারের পরিমাণ কম লাগবে।একই এলাকার ভুট্টা চাষি আব্দুল গফুর বাংলানিউজকে জানান, ভুট্টায় সাধারণত রোপণ থেকে ওঠা পর্যন্ত দুই/তিনটি সেচ দিতে হয়। বৃষ্টিপাত হলে আর সেচ দিতে হবে না। এতে অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয়ী হবেন তারা।হলুদ ঘর গ্রামের কৃষক মোজাহার আলী, সদর উপজেলার আমহাটি এলাকার কৃষক মাহফুজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, এ বৃষ্টি আম ও লিচুর মুকুলের জন্য খুবই উপকারী। এ বছর অন্যান্য বারের তুলনায় গাছে মুকুল আগে এসেছে এবং অবস্থাও খুব ভালো।তারা জানান, বৃষ্টিপাতের কারণে গাছে মুকুলের আবরণ থেকে ধুলো-বালি সরে যাবে এবং পোকা-মাকড়ের প্রার্দুভাব কম হবে।অপরদিকে, মশুর ও গম চাষিরা বলছেন ভিন্ন কথা। নলডাঙ্গা উপজেলার বাসুদেবপুর চকপাড়া গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলী বাংলানিউজকে জানান, প্রায় ১০ বিঘা জমিতে তিনি মশুর চাষ করেছেন। এ ফসলের অধিকাংশই পাক ধরেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি এ মশুর ঘরে তুলবেন। কিন্তু বৃষ্টিপাতের কারণে দুঃশ্চিন্তায় আছেন।তিনি বলেন, এভাবে বৃষ্টিপাত হলে দেরিতে চাষকরা মশুরগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। একই কথা জানালেন, কৃষক নিতাই চন্দ্র, সাইফুল ইসলামসহ আরো অনেকে।
এই বিভাগের আরো খবর