শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

আইসিটি আইনে না’গঞ্জ সদর থানায় সাংবাদিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ৩ মামলা

প্রকাশিত: ১৫ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৭

যুগের চিন্তা ২৪ ডটকম : একটি সংবাদ প্রকাশের জের ধরে আইসিটি আইনে আরো তিনটি মামলা করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর ছোট ভাই আলী রেজা রিপন। তিনটি পৃথক মামলায় দৈনিক যুগান্তরের জেলা প্রতিনিধি রাজু আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ বার্তা অনলাইনের প্রকাশক সিফাত আল রহমান, নির্বাহী সম্পাদক মাহমুদ হাসান কচি ও নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রকাশিত স্থানীয় দৈনিক ডান্ডিবার্তার সম্পাদক হাবিবুর রহমান বাদলকে বিবাদী করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে ওই তিনটি মামলার আবেদন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় দাখিল করা হয়। থানার ডিউটি অফিসার এস আই সাইফুল ইসলাম জানান, তিনটি মামলা আইসিটি অ্যাক্ট ৫৭ ধারা মোতাবেক রেকর্ড হবে। এর আগে গত ১২ এপ্রিল একই সংবাদের প্রেক্ষিতে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তার ছোট ভাই আলী রেজা রিপনের ৫০ কোটি টাকার মানহানির অভিযোগে দৈনিক ডান্ডিবার্তার সম্পাদক ও প্রশাসক হাবিবুর রহমান বাদলের বিরুদ্ধে আলী রেজা রিপন আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলার আর্জি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিকেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন। প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই আইসিটি আইনে পুলিশ চাইলে মামলা নিতে পারেন কিনা এবং যেসকল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তাদের গ্রেফতার করা হবে কিনা জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো: মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে  বলেন, থানায় কেউ অভিযোগ দিলে তা তদন্ত পূর্বক মামলা রুজু করার কোন বিধান নেই। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই পুলিশ মামলা রুজু করবেন। তবে পরবর্তীতে যদি বাদীর অভিযোগ মিথ্যে হয় তাহলে পুলিশ অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন। আর সাংবাদিকদের গ্রেফতার প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, যেহেতু আইসিটি আইনে মামলা দায়ের হলে পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করতে পারেন। সেহেতু আইন অনুযায়ীই পুলিশ পরবর্তী পদক্ষেপ নিবেন। মামলার প্রেক্ষিতে ডান্ডিবার্তার সম্পাদক আলহাজ¦ হাবিবুর রহমান বাদল বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা দায়েরের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জে এই আইনের অপব্যাবহার শুরু হলো। নারায়ণগঞ্জের গণমাধ্যমকে কোনঠাসা করার প্রক্রিয়া শুরু করলো মেয়র আইভীর ভাই রিপন। আর নারায়ণগঞ্জের আলোর প্রকাশক রাজু আহম্মেদ বলেন, মেয়র আইভীর ভাই উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে এই মামলা করেছেন। কিন্তু আমার বোধগম্য হচ্ছেনা পুলিশ বিনা তদন্তেই কিভাবে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই মামলা রুজু করলেন। আমরা তো এই সমাজের অপরাধী কেউ না যে পলাতক থাকবো। যেহেতু আইন সবার জন্যই সমান, সেহেতু আমি যদি মানহানিকর কোন সংবাদ পরিবশেন করতাম তাহলে পুলিশ বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে মামলা রুজু করতে পারতেন। সম্প্রতি জাতীয় দৈনিক ইত্তেফাকের প্রকাশিত সংবাদের বরাত দিয়ে ‘প্রতারক নাছির স্বীকার করলেও সাড়ে চার কোটি টাকা বেহাত হওয়ার পরও রিপনের নিরবতা বিভিন্ন প্রশ্নের সৃষ্টি হচ্ছে মেয়র আইভীর ভাই রিপনের কোটি টাকার সন্ধানে মাঠে পুলিশ’ শিরোনামে দৈনিক ডান্ডিবার্তায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। একই সংবাদ ভিন্ন শিরোনামে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নারায়ণগঞ্জ বার্তা, নারায়ণগঞ্জের আলোসহ জাতীয় দৈনিক যুগান্তরেও প্রকাশিত হয়। সদর মডেল থানার ডিউটি অফিসার এস আই সাইফুল জানান, তিনটি মামলাতে মূলত আইভীর ছোট ভাই আলী রেজা রিপনকে জড়িয়ে একটি আর্থিক কেলেংকারী নিয়ে সংবাদের অভিযোগ তোলা হয়। এতে আরো বলা হয়, এসব সংবাদ ওয়েবসাইটে আপলোডের কারণে রিপন ছাড়াও ডাঃ আইভীর মানহানি হয়েছে। এর আগে গত ১২ এপ্রিল একই সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে দৈনিক ডান্ডিবার্তার সম্পাদক ও প্রশাসক হাবিবুর রহমান বাদলের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি টাকার মানহানির করা হয়। আদালতে মামলাটি করেন আলী রেজা রিপন।এই সংবাদ প্রকাশের ফলে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তার ছোট ভাই আলী রেজা রিপনের মানহানি হয়েছে বলে মামলাটি করা হয়। ৫০ কোটি টাকার মানহানির মামলা : বিভ্রান্তকর তথ্যে একটি সংবাদ প্রকাশ করায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও তার ছোট ভাই আলী রেজা রিপনের মানহানির অভিযোগে মামলা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রকাশিত দৈনিক ডান্ডিবার্তার সম্পাদক ও প্রশাসক হাবিবুর রহমান বাদলের বিরুদ্ধে আলী রেজা রিপন বুধবার বিকেলে আদালতে ওই মামলাটি দায়ের করেন। আদালত মামলার আর্জি গ্রহণ করে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিকেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন। মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ এপ্রিল মঙ্গলবার দৈনিক ডান্ডিবার্তার প্রথম পাতায় ৮ কলামে ‘মেয়র আইভীর ভাই রিপনের কোটি টাকান সন্ধানে মাঠে পুলিশ’ শীর্ষক শিরোনামে আলী রেজা রিপনের বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটানো হয়েছে। সংবাদটিতে রিপনের কোন ধরনের ভাষ্য বক্তব্য নেওয়া হয়নি।  প্রকৃতপক্ষে রিপন এ ঘটনার সঙ্গে কোনভাবেই জড়িত না। সংবাদটিতে রিপনের বোন সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকেও সামাজিকভাবে হয়রানি ও খাটো করা হয়েছে যা মানহানিকর। আলোচনা সমালোচনার কারণে আইভী ও মামলার বাদী রিপনের ৫০ কোটি টাকার মানহানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ অভিযোগে দন্ডবিধির ৫০০ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন ডান্ডিবার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক হাবিবুর রহমান বাদল। নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে দায়ের করা ওই মামলার শুনানীর পর বিচারক পিবিআই এর নারায়ণগঞ্জ জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আগামী ২৮ মে মামলার পরবর্তী ধার্য্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়। আলী রেজা রিপনের পক্ষের আইনজীবী জাকারিয়া হাবিব সত্যতা স্বীকার করেছেন। পর্যবেক্ষকমহল মনে করেন, মানহানীর মামলার পর এবার মেয়র আইভীর ভাই আইসিটি আইনে মামলা দায়ের করলেন। কেননা একই সংবাদ পত্রিকায় ছাপানোর পাশাপাশি অনলাইনেও প্রচারিত হয়। মানহানীর মামলা হয়েছিল শুধু দৈনিক ডান্ডিবার্তার সম্পাদক হাবিবুর রহমান বাদল এর বিরুদ্ধে। আইসিটি আইনে মামলা হলো ৪ জনের বিরুদ্ধে।
এই বিভাগের আরো খবর