শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

না’গঞ্জ ক্লাবের আর্থিক অনিয়মের তদন্ত শেষ: ইজিএম এ ‘তদন্তরিপোর্ট’ পেশ হবে কী

প্রকাশিত: ৪ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ৪ মার্চ ২০১৭

বিশেষ প্রতিনিধি : এক মাসের ও বেশি সময় নিয়ে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত শেষ করে কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্টও পেশ করার অপেক্ষায়। নিয়মানুযায়ী ইজিএম এ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেশ করার কথা থাকলেও নেপথ্যের কারসাজিতে তা হচ্ছেনা। নেপথ্যের ওইসব কুশীলবরা গতবার ইজিএম এ প্রেসিডেন্ট ফোরাম করার ধোঁয়া তুলেছিলেন। এরপর প্রেসিডেন্ট ফোরামের দুই একজন সদস্য তদন্ত কমিটির সাথে চকিতে একদিন বসেও ছিল। কাগজপত্র ঘেঁটে তারা লজ্জায় পড়ে যান। কিন্তু তদন্ত কমিটি ধারাবাহিকতা রক্ষা করেই তদন্ত কাজ চালিয়ে গেছে। এবার দূর্নীতির বরপুত্র শংকর রায়কে বাঁচাতে শুরু হয়েছে নতুন খেলা। ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার আর্থিক অনিয়মের হোতা , ওসমান পরিবারের সমর্থনপুস্ট দূর্নীতির বরপুত্র শংকর কুমার রায়কে বাঁচাতে উঠেপড়ে লেগেছে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লিঃ এর কতিপয় প্রভাবশালী সদস্য। আবারো ইজিএম ডাকা হয়েছে। তারিখ ৮ মার্চ। উদ্দেশ্য ২০১৭ সালের আর্থিক বাজেট পাস করিয়ে নেয়া। প্রশ্ন উঠেছে যেখানে বড় ধরনের অনিয়ম ধরা পড়ায় ২০১৬ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব পাস হয়নি- সেখানে ২০১৭ সালের বাজেট পাস হবে কিভাবে ? স্বাভাবিক নিয়মেই ২০১৬ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব আগে পাস হতে হবে। তারপর ১৭ এর বাজেট। ১৬ সালের আয়-ব্যয় হিসাবকে পাশ কাটিয়ে বা ধামাচাপা দিয়ে ১৭ এর বাজেট পাস করানো যাবেনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ক্লাব সদস্য জানিয়েছেন, ৮ মার্চ প্রথমে ইজিএম হবে, এরপর মতবিনিময় সভা রাখা হয়েছে। হয়তো এই মতবিনিময় সভার ফাঁক গলিয়ে ১৬ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব ছলচাতুরীর মাধ্যমে পাস করিয়ে নেয়ার কসরত চলতে পারে। সে রকম প্রস্তুুতির খবর মিলেছে। যদি ইজিএম এ কোন প্রভাবশালী সদস্য ইনিয়ে-বিনিয়ে নানান কথার ছলে ১৬ এর আয়-ব্যয়ের হিসাবকে পাশ কাটিয়ে ১৭ এর বাজেট পাস করানোর চেস্টা করে-তাহলে ক্লাবের সাধারণ সদস্যরা তা প্রতিহত করতে প্রস্তুত। গত ইজিএম এ বড় বড় কথা বলে প্রভাবশালী সদস্যরা টাইম পাস করেছে। এবার সে সুযোগ দেয়া হবেনা। ক্লাবের সাধারণ সদস্যদের টাকা লুটপাটকারীদের চিন্থিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জোরালো হচ্ছে বলে সিনিয়র অনেক সদস্য যুগের চিন্তাকে জানিয়েছেন। তাদের মতে, দৈনিক যুগের চিন্তায় ক্লাবের ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার আর্থিক অনিয়মের খবর প্রকাশিত হওয়ায় লুটপাটকারীদের মাথায় বাজ পড়েছে। তাঁরা এই অনিয়ম ধামাচাপা দিতে প্রভাবশালীদের দ্বারস্থ হচ্ছে। একাধিক সূত্রে জানাগেছে, গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর এজিএম এ ২০১৬ এর আয়-ব্যয় হিসাব পাস হয়নি। এখানে আর্থিক ঘাপলা নিয়ে সদস্যরা অনেক কথা বলেন। সদস্যদের তোপের মুখে পড়ে ক্লাব কর্তৃপক্ষ আর্থিক অনিয়ম তদন্তে অডিট কমিটি করে দেয়। সেই অডিট কমিটিকেও কাজ করতে দেয়া হয়নি। অডিট কমিটি সকল কাগজপত্র , বিল,ভাউচার সীল করে নিয়েছিল। দুদিনের মাথায় ৩১ ডিসেম্বর অডিট কমিটির সীল করা কাগগপত্র, বিল, ভাউচার সবকিছু পুণরায় সীল করে নেয় নতুন কমিটি। ফলে আর্থিক অনিয়ম সাময়িক চাপা পড়ে। পরবর্তীতে নতুন বছরে নতুন কমিটি ইজিএম ডাকে। ২৪ জানুয়ারী ইজিএম হয়। এদিনও ১৬ সালের আয়-ব্যয়ের হিসাব পাস হয়নি। পুরনো অডিট কমিটিকেই তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। এক মাসের ও বেশি সময় নিয়ে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত শেষ করে কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্টও পেশ করার অপেক্ষায়। নিয়মানুযায়ী ইজিএম এ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেশ করার কথা থাকলেও তা হচ্ছেনা। ক্লাবের সদস্যরা অভিযোগ করেন, দূর্নীতির বরপুত্র শংকর রায়কে বাঁচাতে শুরু হয়েছে নতুন খেলা। তবে ক্লাবের সাধারণ সদস্যরা দূর্নীতির বরপুত্রদের ইতিমধ্যেই চিন্থিত করেছে। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের মুখোশ উন্মোচন করাটাই বাকি। অডিট কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন ইজিএম এ উত্থাপিত হলেই ক্লাবের দূর্নীতির নায়কেরা পালানোর পথ পাবেনা। পাশাপাশি লুটেরাদের দোসরদেরও সমাজের কাছে চিন্থিত করার প্রক্রিয়া চলছে। কোন প্রভাবশালী পরিবার লুটেরাদের বাঁচাতে পারবেনা। নারায়ণগঞ্জ ক্লাব নারায়ণগঞ্জবাসীর সম্পত্তি। লুটেরাদের প্রতিহত করতে হবে। জানাগেছে, গত ৬ বছর যাবত নির্বাচনহীনতার সংস্কৃতি জগদ্দল পাথরের ন্যায় গেথে বসায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আর্থিক অনিয়মের ঘটনা ধরা পড়েছে গত বছরের (২০১৬) অডিট রিপোর্টে। অডিট রিপোর্টে ধরা পড়েছে ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার অনিয়ম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সিনিয়র সদস্য জানান, বিগত কমিটি নানা অনিয়ম করেছে। যা অডিট রির্পোটেও উঠে এসেছে। সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে ‘ইউরোপ ট্যুর’ এর ৫৬ লাখ টাকা শংকর কুমার রায়ের একাউন্টে ডিপোজিট হওয়ার অনিয়মটি। সদস্যদের এই টাকা ক্লাবের একাউন্টে জমা হওয়ার নিয়ম। সেখানে কমিটির একজন কর্মকর্তার একাউন্টে জমা হল কোন আইনে ? কোন বিধিমতে এটা করা হয়েছে ? এজিএম এ সাধারণ সদস্যদের উত্থাপিত এ প্রশ্নের উত্তর কমিটি দিতে পারেনি। তবে এই শংকর কুমার রায়ের এই আর্থিক কেলেঙ্কারীর বিষয়টি পত্রিকায় প্রকাশিত হলে ১৯ জানুয়ারী তিনি ৪১ লাখ টাকা ক্লাবের একাউন্টে জমা করেন। সদস্যদের প্রতিবাদের মুখে, যা তদন্তে পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়। সাত সদস্যের এই কমিটিতে আছেন, জনাব কাসেম জামাল, আব্দুর রাশেদ রাশু, দেলোয়ার হোসেন চুন্নু, এড.আহসানুল করিম চৌ: বাবুল, এড. মজিদ খন্দকার, মোঃ সামছুল হক ও খাজা আজিজুল হক টুলু। জানাগেছে, ক্লাবের নিযুক্ত নিরীক্ষাকারী সংস্থা এস এইচ খান অ্যান্ড কোংয়ের ওই প্রতিবেদন গত ২৯ ডিসেম্বর ক্লাবের বার্ষিক সাধারণ সভায় উত্থাপন করা হয়। তখন ক্লাবের সাধারণ সদস্যরা আর্থিক অনিয়ম তদন্তের দাবি জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে অনিয়ম তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন কাসেম জামাল, আব্দুর রাশেদ, আহসানুল করীম চৌধুরী, দেলোয়ার হোসেন, আবদুল মজিদ খন্দকার, সামসুল হক, খাজা আজিজুল হক। তাঁরা সবাই ক্লাবের সদস্য। এক বছরে দেশে-বিদেশে ভ্রমণ, বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালনসহ ২০টি খাতে প্রায় ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার অনিয়ম হয়েছে বলে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সূত্রমতে, ক্লাবের ২০১৬ সালের কমিটির সভাপতি মাহমুদ হোসেন ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শংকর কুমার রায় ৫ জানুয়ারি একটি যৌথ প্রত্যয়নপত্র নিরীক্ষাকারী সংস্থাকে দেন। প্রত্যয়নপত্রে তাঁরা লিখেছেন, ‘অসমন্বিত তহবিল বাবদ ৪২ লাখ ২৩ হাজার ২৯৬ টাকা বিভিন্ন কর্মকা-ে অগ্রিম প্রদান করা হয়েছে, যা পরবর্তী সময়ে সমন্বয় করা হবে। দুটি নতুন সদস্য পদ ট্রান্সফার ফি ও অনুদানের মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য পে-স্লিপের খরচ বাস্তবতার আলোকে প্রদান করা হয়েছে। বিভিন্ন কারণে উক্ত খরচের অনুকূলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। ভবিষ্যতে উপরোক্ত অসংগতির কারণের দায় আমাদের ওপর বর্তাবে।’ জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের আর্থিক অনিয়ম এর বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে উঠে এসেছে ‘এস.এইচ. খান এন্ড কোং’ নামে অডিটকারী সংস্থার অডিট রিপোর্টে। ২০ টি খাতে মোট ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়েছে। বিপুল পরিমাণ টাকার অধিকাংশ পেমেন্ট হয়েছে ‘আন অথেনটিক’। যার পক্ষে নেই সাইনিং এ্যাপ্রুভাল, নেই কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট। ক্যাশ ইন হ্যান্ড : এই খাতের অনিয়ম সম্পর্কে অডিটকারী সংস্থার জোরালো আপত্তি আছে। অডিটকারী সংস্থা লিখেছে অডিট চলাকালে তারা দেখেছে বৃহৎ অংকের নগদ টাকা ক্লাবের ক্যাশে জমা ছিল, যা প্রশ্নবোধক। সশরীরে ভেরিফিকেশন করার সময় সংস্থাটি নগদ ক্যাশ জমার যে চিত্র পায় তা ছিল, জুলাই ১৬ তে ক্যাশ জমা ছিল ৮৬ লাখ ৩৯ হাজার ১২৭ টাকা। আগস্ট ১৬ তে ক্যাশ জমা ছিল ৭৯ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। সেপ্টেম্বর ১৬ তে ক্যাশ জমা ছিল ৭৮ লাখ ৩৮ হাজার ৯৭২ টাকা। অক্টোবর ১৬ তে ছিল ৪২ লাখ ২৩ হাজার ২৯৬ টাকা। নিয়মানুযায়ী ক্লাবের ক্যাশে কখনোই ৫০ হাজারের বেশি ক্যাশ টাকা রাখা যাবেনা। সেখানে সর্বোচ্চ ৮৬ লাখ এবং সর্বনিম্ন ৪২ লাখ টাকা ক্যাশে রাখা নিয়ে নানান প্রশ্নের উদয় হয়েছে। ক্লাব সদস্যরা বিগত কমিটির অনেক কর্মকর্তার দিকেই তর্জনী তুলছেন। এ্যানট্রেন্স ফি : দুই জন নতুন মেম্বারকে স্থানান্তরিত মেম্বার হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করে এদের প্রত্যেক এর কাছ থেকে ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেয়া হয় ‘ডোনেশন’ হিসেবে। এটাও অডিটকারী সংস্থা চিন্থিত করেছে। দুই জন নতুন মেম্বার হলেন ইঞ্জিনিয়ার আমিনুজ্জামান (এ-৩৩৫) ও আশিষ কুমার দাস (এ-৩৩৪)। অডিটকারী সংস্থার কাছে আরো একটি নজরে আসে । সেটা হল এই মেম্বারশীপ দেয়ার সময়টাতেই ক্লাবের বিদ্যুতের সাব-স্টেশন বসানোর জন্য ইঞ্জিনিয়ার আমিনুজ্জামানের অনুকূলে ১৯ লাখ টাকার একটি ওয়ার্ক অর্ডার প্রদান করা হয়। যা পার্টি ট্রানজেকশনের সাথে জড়িত একই সাথে টাকার পরিমানটাও প্রশ্নবোধক। মিসাইলেনি রিসিপ্ট : এই খাত সম্পর্কে অডিটকারী সংস্থা লিখেছে, আমাদের ইন্সপেক্শন চলাকালে আমরা জানতে পারি যে, সুমন নামে এক ব্যক্তি অকশনে কিছু মালামাল বিক্রি করে ৩ লাখ টাকা গ্রহণ করেছে। আমরা এর কোন ব্যাখ্যা পাইনি যে, কি ধরনের মালামাল বিক্রি করা হয়েছে অথবা অকশনের জন্য কোন টেন্ডার আহবান করা হয়েছে কিনা। এ খাত সম্পর্কে ক্লাব ম্যানেজমেন্ট মতামতের ঘরে লিখেছে, এডমিনিস্ট্রেশন কর্তৃক অকশনের সমর্থনে ডকুমেন্টস মেইনটেন করা হয়নি। ডিপার্টমেন্টাল স্টোর : এই খাতে ও অনিয়ম ছিল। স্টোরে মালের মজুদ কম ছিল। এ জন্য কারো বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। পুরো বিষয়টাই যেন মগের মুল্লুক। যার পরিমাণ ৯৯ হাজার ৩৪৮ টাকা ৮৭ পয়সা মাত্র। অডিটকারী সংস্থা দেখতে পায় যে, উক্ত পরিমান টাকার স্টক শর্টেজ ছিল। এই লোকসানের বিষয়ে আর্থিক প্রতিবেদনে কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ বিষয়ে ক্লাব ম্যানেজমেন্ট একটি দায়সারা গোছের মতামত দিয়েছে। কক্সবাজার ট্যুর : কক্সবাজারের ট্যুরেও অনিয়ম হয়েছে। এর পরিমান ৪ লাখ ৩৪ হাজার ২৫০ টাকা। এই টাকা পেমেন্ট করার ব্যাপারে আমরা কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট পাইনি বলেছে অডিটর। ইউরোপ ট্যুর ফান্ড : ইউরোপ ট্যুর ফান্ড নিয়ে বড় ধরনের অনিয়ম করেছেন বিগত কমিটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শংকর কুমার রায়। তিনি ১১ টি পে-স্লীপ এর মাধ্যমে ৫৬ লাখ টাকা নিজের ব্যাংক একাউন্টে জমা করেছিলেন। বছর শেষে এই টাকার পরিমাণ ৪১ লাখে দাঁড়ায়। অডিটর তার আপত্তিতে উল্লেখ করেছে যে, মাত্র ১১ টি পে-স্লীপ এর মাধ্যমে শংকর কুমার রায় তার ব্যক্তিগত একাউন্টে ইউরোপ ট্যুর ফান্ডের ৫৬ লাখ টাকা জমা করে। এটা প্রশ্নবোধক বিষয়। আমরা এ বিষয়ে ম্যানেজমেন্টের কোন ধরনের এ্যাপরোভাল পাইনি। থার্টি ফাস্ট নাইট আর্টিস্ট পেমেন্ট : ২০১৫ ইং থার্টি ফাস্ট নাইটের আর্টিস্ট পেমেন্ট নিয়েও রয়ে গেছে অপার রহস্য। দুটি পে-স্লীপের মাধ্যমে শিল্পী-কলাকুশলীদের ৩০ লাখ টাকা পেমেন্ট করা হয়েছে। অথচ এই বিপুল পরিমাণ টাকা লেনদেনের বিপরীতে কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্টস ও শিল্পী-কলাকুশলীদের সাথে কোন ধরনের কন্ট্রাক্ট পেপারও খুঁজে পায়নি অডিটর। কার্ডরুম এক্সপেনসেস : কার্ডরুমের ইন্টেরিয়র ডেভলপমেন্ট এর জন্য একটি পে-স্লীপে সাড়ে ৯ লাখ টাকা পেমেন্ট নিয়েও ঘাপলা বিদ্যমান। অডিটর বলেছে, উক্ত পরিমাণ টাকা লেনদেন এর বিপরীতে আমরা কোন ধরনের সাপোর্টিং পেপার ও কন্ট্রাক্ট ডকুমেন্টস পাইনি। কোন সংস্থা ইন্টেরিয়র ডেভলপমেন্টের কাজ করেছে তাদের কোন ডকুমেন্টস এমনকী কোন নাম ঠিকানাও মিলেনি। ২৬ শে মার্চ : ২৬ শে মার্চ এর বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদি নিয়ে একটি পে-স্লীপের মাধ্যমে ২ লাখ টাকা পেমেন্ট করা হয়েছে। নেই সাইনিং এ্যাপ্রুভাল, নেই কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট। অডিটরের মতে, এটাও সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত লেনদেন। টেনিস টূর্নামেন্ট : টেনিস টূর্নামেন্ট নিয়েও একটি পে-স্লীপের মাধ্যমে ২ লাখ টাকা পেমেন্ট করা হয়েছে। নেই সাইনিং এ্যাপ্রুভাল, নেই কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট। অডিটরের মতে, এটাও সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত লেনদেন। বিলিয়ার্ডস এন্ড স্নুকার টুর্নামেন্ট : বিলিয়ার্ডস এন্ড স্নুকার টূর্নামেন্ট নিয়েও একটি পে-স্লীপের মাধ্যমে ২ লাখ টাকা পেমেন্ট করা হয়েছে। নেই সাইনিং এ্যাপ্রুভাল, নেই কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট। অডিটরের মতে, এটাও সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত লেনদেন। কক্সবাজার ট্যুর : ৪ অক্টোবর ২০১৬ তে কক্সবাজার ট্যুর নিয়ে দেড় লাখ টাকার ঘাপলা হয়। একটি পে-স্লীপের মাধ্যমে দেড় লাখ টাকা পেমেন্ট করা হয়েছে। নেই সাইনিং এ্যাপ্রুভাল, নেই কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট। অডিটরের মতে, এটাও সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত লেনদেন। বেঙ্গলি নিউ ইয়ার : ২০১৬ তে বাংলা নববর্ষে ঘাপলা হয় ১ লাখ টাকার। একটি পে-স্লীপের মাধ্যমে ১ লাখ টাকা পেমেন্ট করা হয়েছে। নেই সাইনিং এ্যাপ্রুভাল, নেই কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট। অডিটরের মতে, এটাও সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত লেনদেন। বসন্ত বরণ :বসন্ত বরণ উৎসব উপলক্ষেও ১ লাখ ৩৯ হাজার টাকার অনিয়মের উৎসব পালন করা হয়। সেই একই অভিযোগ। একই কায়দা। একটি পে-স্লীপের মাধ্যমে ১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা পেমেন্ট করা হয়েছে। নেই সাইনিং এ্যাপ্রুভাল, নেই কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট। অডিটরের মতে, এটাও সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত লেনদেন। ওমরাহ হজ্ব : ওমরাহ হজ্ব নিয়েও ক্লাব কর্তৃপক্ষ ২ লাখ টাকার অনিয়ম করেছে। একটি পে-স্লীপের মাধ্যমে ২ লাখ টাকা পেমেন্ট করা হয়েছে। নেই সাইনিং এ্যাপ্রুভাল, নেই কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট। অডিটরের মতে, এটাও সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত লেনদেন। ব্যাংকক ট্যুর :ব্যাংকক ট্যুর নিয়ে অনিয়মের পরিমান ৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা। একটি পে-স্লীপের মাধ্যমে ৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা পেমেন্ট করা হয়েছে। এর বিপরীতে নেই সাইনিং এ্যাপ্রুভাল, নেই কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট। অডিটরের মতে, এটা সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত লেনদেন। মরিসাস ট্যুর :মরিসাস ট্যুর হবে অথচ আর্থিক হবেনা ! তাই কি হয় । এই ট্যুরে অনিয়ম হলো ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৯৯৩ টাকা। একটি পে-স্লীপের মাধ্যমে ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৯৯৩ টাকা পেমেন্ট করা হয়েছে। এর বিপরীতে নেই সাইনিং এ্যাপ্রুভাল, নেই কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট। অডিটরের মতে, এটা সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত লেনদেন। রিনোভেশন :রিনোভেশন বাবদ ১ লাখ ৭০ হাজার টাকার অনিয়ম হয়। একটি পে-স্লীপের মাধ্যমে ১লাখ ৭০ হাজার টাকা পেমেন্ট করা হয়েছে। এর বিপরীতে নেই সাইনিং এ্যাপ্রুভাল, নেই কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট। অডিটরের মতে, এটা সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত লেনদেন। রিনোভেশন :রিনোভেশন বাবদ দ্বিতীয় দফায় অনিয়ম হয় ২ লাখ টাকার। একটি পে-স্লীপের মাধ্যমে ২লাখ টাকা পেমেন্ট করা হয়েছে। এর বিপরীতে নেই সাইনিং এ্যাপ্রুভাল, নেই কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট। অডিটরের মতে, এটা সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত লেনদেন। কমিউনিটি সেন্টার বিল্ডিং :কমিউনিটি সেন্টারের জন্য অনিয়ম হয়েছে ২ লাখ টাকা। সেই একই অভিযোগ। একই কায়দা। একটি পে-স্লীপের মাধ্যমে ২ লাখ টাকা পেমেন্ট করা হয়েছে। নেই সাইনিং এ্যাপ্রুভাল, নেই কোন সাপোর্টিং ডকুমেন্ট। অডিটরের মতে, এটাও সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত লেনদেন।
এই বিভাগের আরো খবর