মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

বিএনপি’তে নতুন ‘ঐক্যজোট’

প্রকাশিত: ১৬ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৭

যুগেরচিন্তা২৪.কম: প্রাচ্যেরডান্ডি নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’তে ঝড় উঠেছে। বড় ধাক্কা আসছে। দক্ষিণ কোনে মেঘ জমেছে। গুমোট বাতাস। যে কোন সময় শুরু হবে কালবৈশাখী ঝড় ! নবগঠিত আংশিক জেলা ও মহানগর বিএনপি কমিটিকে কেন্দ্র করে ত্যাগী ও সিনিয়র নেতাদের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ থেকেই রাজনীতির আকাশে ঝড়ের আভাস মিলেছে বলে মনে করেন তৃণমূল নেতৃবৃন্দ। দলের একাধিক সূত্রে জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র বিএনপি নেতারা ‘ঐক্যজোট’ পড়তে উদ্যোগী হয়েছেন। এই ঐক্যজোট গড়ার উদ্দেশ্য হল আগামীতে আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে থাকা। জেলা ও মহানগর বিএনপি’র ত্যাগী ও সিনিয়র নেতারা যোগ্যতার মূল্যায়ন পাননি। ত্যাগী ও সিনিয়রদের দূরে সরিয়ে দিয়ে কেন্দ্রের একটি অংশকে ম্যানেজ করে সম্প্রতি জেলা ও মহানগর বিএনপি’র আংশিক কমিটি হাসিল করে এনেছেন না’গঞ্জ বিএনপি’র আরেকটি অংশ। এই অংশটির নেতৃত্বে যিনি আছেন, তিনি ভাল মাপের নেতা। কিন্তু তিনি একজন ব্যবসায়ীও বটে। ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বার্থে নেতাজীরা বরাবরই নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের প্রেসক্রিপশন নিয়ে জীবন যাপন করেন। জেলা ও মহানগর বিএনপি’তে কোন কোন নেতাদের মাইনাস করলে বিএনপি আওয়ামীলীগের ‘বি’ টীম হয়ে যাবে, এবং রাজপথে নেমে ফটোসেশন করতে অসুবিধা হবেনা- তেমন কাজই করেছেন। তেমন নেতাদেরই মাইনাস করে দিয়েছেন। এতে একজন কেন্দ্রীয় নেতা ভগবানকে সাক্ষী রেখে সাফাই গেয়েছেন এই অংশটির পক্ষে। এতেকরে দলের চেয়ারপারসন ও সাময়িক বিভ্রান্ত হয়েছেন। আংশিক কমিটির আংশিক নেতারা খুশিতে বগল বাজাচ্ছেন আর শহীদ জিয়ার আদর্শের কথা বলে একদফা রাজপথে ফটোসেশন করেছেন। আংশিক কমিটির আংশিক নেতাদের ফটোসেশনে ও রাজপথে নামার পারমিশন ওসমান পরিবার থেকে নেয়া আছে। আপাতত আংশিক কমিটি আ’লীগের দিকে নতজানু হয়ে পড়েছে।সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জে দলকে এই নতজানু অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতেই ত্যাগী ও সিনিয়র নেতারা রাগ করে দূরে সরে না থেকে ‘ঐক্যজোট’ গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এই ঐক্যজোটে জেলা, মহানগর ও থানার সকল নেতাকর্মীর যোগ্য মূল্যায়ন করা হবে। এই ঐক্যজোট প্রথমে দলের ভেতরের ভাইরাস দূর করে দলকে আরো শক্তিশালী করবে।অনুসন্ধান করে জানাগেছে, ঐক্যজোটের নেতৃত্বে যাঁরা আসছেন তাঁরা রাজপথের পরিক্ষীত সৈনিক। তাদের প্রতি বিএনপি’র নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সমর্থকদের পর্যন্ত আস্থা রয়েছে। ঐক্যজোটের মধ্যমনি হচ্ছেন, সাবেক সভাপতি ও মজলুম জননেতা এড. তৈমূর আলম খন্দকার, এক সময়ে শহরের কিং ও বেগম খালেদা জিয়ার আস্থাভাজন হাইকমান্ড খ্যাত নেতা এমএ মজিদ, বিদগ্ধ রাজনীতিবিদ ও সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, কেন্দ্রীয় নেতা আলহাজ্ব এম বদরুজ্জামান খান খসরু। আরো আছেন, রাজপথ কাঁপাানো মহানগর নেতা আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম, বর্ষীয়ান বিএনপি নেতা জামালউদ্দিন কালু ও রূপগঞ্জের দীপু ভূঁইয়া।জানাগেছে, সম্প্রতি দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নারায়ণগঞ্জের প্রকৃত পরিস্থিতি জানতে পেরেছেন। বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ব্যতীত অন্য কয়েকজন স্থায়ী কমিটির সদস্য মারফত চেয়ারপারসন নারায়ণগঞ্জ সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন। স্থায়ী কমিটির ওই সদস্যরা চেয়ারপারসনকে জানিয়েছেন যে, নারায়ণগঞ্জের মূলধারায় নেতারাই কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন। যারা কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন তারাও ভাল নেতা। কিন্তু তাদের টোটাল টীমওয়ার্ক নিয়ে সন্দেহের যথেষ্ঠ অবকাশ রয়ে গেছে। মহানগর ও জেলার কয়েকজন তারকা নেতার বিরুদ্ধে ওসমান পরিবারের আনুকূল্য পাওয়ার চেস্টার জোরালো অভিযোগ রয়েছে। ফলে দলের স্বার্থে সন্দেহজনক নেতাদের সাথে ত্যাগী নেতাদের একটা মেলবন্ধন তৈরী করে দিতে পারলে চাইলেও ওসমান পরিবারমুখি নেতারা ফাঁকি দিতে পারবেনা। কমিটির মধ্যেই এন্টিভাইরাস সৃস্টি হবে। কোন পক্ষই ফাঁকি দেয়ার সুযোগ পাবেনা। এতেকরে দলের মঙ্গল হবে। এজন্যই নতুন ‘ঐক্যজোট’কে স্বাগত জানিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশারফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ও ড.মঈন খান সম্প্রতি দলের চেয়ারপারসনকে নারায়ণগঞ্জের পরিস্থিতি অবগত করেছেন। চেয়ারপারসন পরিস্থিতি অবগত হয়েছেন। তিনি জটিলতা নিরসনে স্থায়ী কমিটির ওই অংশটির পরামর্শ চেয়েছেন। জেলা ও মহানগর কমিটি ‘রিফর্মের’ পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পরামর্শ বিফলে যায়নি। জেলা ও মহানগর আংশিক কমিটি’র নেতারা পড়েছেন মহাফাপরে ! রিফর্ম দূরে নয়। রূপগঞ্জের দীপু ভূঁইয়া বর্তমানে সিঙ্গাপুরে রয়েছেন। তিনি সিঙ্গাপুর থেকে ফিরলেই আসল খেলা শুরু হবে বলে মনে করেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
এই বিভাগের আরো খবর