শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

দুধ বিক্রেতা ওসমান গনি হত্যা : বেনসন সোবানসহ ৩ খুনির জামিনে আতংকে বাদীর পরিবার

প্রকাশিত: ১২ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৭

যুগের চিন্তা ২৪ ডটকম (বন্দর) : বন্দরে দুধ বিক্রেতা ওসমান গনি হত্যা মামলার আসামী বেনসন সোবান, সাফিয়া ও রোমানা নামে ৩ খুনির জামিন দিয়েছে আদালত। গতকাল বুধবার নারায়ণগঞ্জ জেলা দায়রা জজ আদালতে তাদের জামিন দেয়।  আসামীদের জমিন  দেয়ায় নিহত ওসমান গনির এক মাত্র ছেলে মামলার বাদি ইব্রাহীম সুমন ও তার পরিবার নিয়ে রয়েছে আতঙ্কে। খুনিদের জামিনে মুক্তি দেয়ায় গ্রামবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। জানা যায়,উপজেলা ধামগড় ইউপির কামতাল গ্রামের মৃত শহর আলীর দুই ছেলে রুহুল আমিন ওরফে আমিন ও ওসমান গনি।  পৈত্রিক সম্পত্তি সিমানা নির্ধারন দুই ভাইয়ের মধ্যে দ্বন্দ্বে চলে আসে। এ নিয়ে কয়েক দফা গ্রাম্য সালিশ বৈঠকে দুই ভাইয়ের মধ্যে সুষ্ট সমাধান করে দেয়া হয়েছে। সালিশ বৈঠকের রায় মেনে আমিন এক বছরের  সময় নেয়। এক বছরের মধ্যে বালু নিচু জমিতে বালু ভারাট করে  ছোট ভাই ওসমান গনিকে বুঝিয়ে দেয়ার আশ^াস দেয়।  বেধে দেয়া  এক বছর সময়  যেতে না যেতেই ছোট ভাই ওসমান গনিকে হত্যার পরিকল্পনা করে বড় ভাই রুহুল আমিন ওরফে আমিন। পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ২০১৬ সালের সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে ওসামন গনি নিজ বাড়িতে গুরুর ঘরের সামনে থেকে ওসামন গনিকে টেনেহেছড়ে তুলে এনে রুহুল আমিনের উঠানে ফেলে আমিন, তার ছেলে শহিদুল ইসলাম ও  মিন্টু, মেয়ে রোমানা, স্ত্রী সাফিয়া, সাফিয়ার মামাতো ভাই বেনসন সোবান,  বোনপো রাসেল এবং চাচাতো ভাইপো হানিফাসহ আরও ৩/৪ জন দারালো ছুরি ও দারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি ভাবে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে পালিয়ে যায়। ওসামন গনিকে টেনেহেছড়ে উঠানে ফেলে কুপানোর সময় পিতাকে বাচাঁতে বড় মেয়ে  সারমিন, ছোট মেয়ে ইতি ও ওসমান গনির স্ত্রী লাখি বেগম এগিয়ে আসলে তাদেরকেও এলোপাথারি ভাবে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেয় এবং গুরুতর আহত করে। পরে স্ত্রী দুই মেয়ের ও বৃদ্ধা মা সাফিয়া ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ওসমান গনি রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থা বেগতিক দেখে ওসমান গনিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক সপ্তাহ আইসিওতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা য়ায়। এ ঘটনায় নিহত ওসমান গনির এক মাত্র ছেলে নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সহকারী ইব্রাহিম সুমন বাদি হয়ে ৮জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় বেনসন সোবান ও হানিফাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দীর্ঘ ৬ মাস পলাতক  থেকে আসামী রুহুল আমিন ওরফে আমিন, তার দুই ছেলে মিন্টু ও শহিদুল ইসলাম,  মেয়ে রোমান এবং আমিনের স্ত্রী সাফিয়া আদালতে আতœসর্মপন করলে আদালত তাদের জেল হাজতে প্রেরন করে। গতকাল বুধবার নারায়ণগঞ্জ জেলা দায়রা জজ আদালত মেয়ে রোমানা  ও মা সাফিয়া এবং মামাতো ভাই বেনসন সোবানকে অস্থায়ী জমিন দিয়েছেন। ওসমান গনি হত্যা, অস্ত্র মামলাসহ একাধীক মামলার আসামসী বেনসন সোবানসহ ৩ খুনির জামিনে মুক্ত হওয়ায় বাদির পরিবার আতঙ্কে রয়েছে। এদিকে খুনিদের জামিন দেয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদ পেনাল চেয়ারম্যান ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য নবীর হোসেন ওসমান গনির খুনিদের বিচার দাবি করে বলেন, রুহুল আমিন সমাজের বিচার সালিশ না মেনে নিজের মনগড়া ও পরিকল্পিত ভাবে ওসমান গনি হত্যা করেছে। জামিনে বাড়িতে এসে জোর প্রয়োগ করলে গ্রামবাসীও খুনিদের ছাড় দেবে না।৪ নং ওয়ার্ডের সাবক ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম জানান, আমিন ও ওসমান গনিকে নিয়ে কয়েক দফা সালিশ বৈঠকে বসা হয়েছিল। সালিশ বৈঠক মেনে আমিন তার ভাইকে পরিকল্পিত ভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদ মহিলা সংরক্ষিত সদস্য সখিনা বেগম জানান, লাঙ্গলবন্দ এলাকার পুলিশের তালিকাভূক্ত চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী ফজলুল হকের বোনকে বিয়ে করে রুহুল আমিন সমাজের কাউকে না মেনে নিজ স্বার্থের জন্য ছোট ভাই ওসামন গনিকে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে। দুই ভাইয়ের বিবেদ মিঠাতে কয়েক দফা সালিশ বৈঠকও বসা হয়েছিল।
এই বিভাগের আরো খবর