শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৭ ১৪৩১

শীতলক্ষ্যায় ৩ সেতু: বদলে যাবে চিরচেনা বন্দর

প্রকাশিত: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

যুগেরচিন্তা২৪.কম: সবই আছে। নেই শুধু স্বপ্নের সেতু। মোট ৩ টি সেতু হবে। বদলে যাবে চিরচেনা বন্দর। দীর্ঘদিনের আক্ষেপকে ভুলিয়ে এবার হতে যাচ্ছে তিনটি সেতু আর একটির কাজ অনেকদূর এগিয়ে নিয়েছে সরকার। আগামী মার্চেই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে বহুল কাংখিত সেতু নির্মাণের কাজ। সরকারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনও করতে যাচ্ছে আরো দুটি সেতু। শীতলক্ষ্যার পূর্বপাড় বন্দরকে নারায়ণগঞ্জের অবহেলিত জনপদ হিসেবে বলা হলেও সেখানে রয়েছে শতফুট চওড়া সড়ক। আছে সড়কে স্ট্রিট লাইট, হচ্ছে সড়কের উন্নয়ন। আছে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সহ আধুনিক শহরের ছোয়াও। কিন্তু আক্ষেপ ছিল শুধুমাত্র সেতুর জন্য। গত দুই যুগ ধরেই বন্দরবাসীর প্রাণের দাবী ছিল একটি শীতলক্ষ্যা সেতু। এ সেতু নির্মাণকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলের নেতারাও ছিল বেশ প্রতিশ্রুতি নির্ভর। কিন্তু আশার বাস্তবায়ন ঘটেনি। এবার বন্দরবাসীর বরাত খুলতে চলেছে। সংশ্লিস্ট সূত্রে জানাগেছে, এদিকে মদনগঞ্জ পয়েন্টে ২০১৭ সালের মার্চ মাস থেকে শুরু হওয়া এ সেতু নির্মাণ কাজ আগামী ৩ বছরের মধ্যে অর্থ্যাৎ আগামী ২০২০ সালের মার্চ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে। নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা সেতুর নির্মাণের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীর দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশার পূরণ হবে বলে মন্তব্য করেছেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল সাংবাদিকদের জানান, তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতুটি হবে ১২৯০ মিটার। যার মধ্যে ৪০০ মিটার হচ্ছে মূল সেতু এবং ৮৯০ মিটার হচ্ছে রাস্তার দুপাশের ভায়াটেক্ট। সেতুটি হবে ৪ লেন বিশিষ্ট, সাথে থাকবে জনসাধারণের পায়ে হাটাঁর জন্য ফুটপাত ও রিকশা চলার জন্য পৃথক লেন। সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নবীগঞ্জ হতে হাজীগঞ্জ খেয়াঘাট নিয়ে ৯৪০ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি সেতু হবে চার লেনের। এর মধ্যে নবীগঞ্জ অংশে থাকবে ২৮০ মিটার, নদীর মাঝে থাকবে ৪২০ মিটার ও হাজীগঞ্জ এলাকাতে থাকবে ২৪০ মিটার। চার লেনের সেতু দিয়ে দুই লেন দিয়ে মানুষ পারাপার হবে আর বাকি দুই লেন দিয়ে যানবাহন চলবে। সেতুটি নির্মাণ করতে খরচ পড়বে প্রায় ৬৪০ কোটি টাকা। সেতু নির্মাণের যে তিনটি ধাপ পেরুতে হয় সোমবারের সভাটি সেটার প্রথম ধাপ। এর যাবে টেন্ডার প্রক্রিয়া। সংশ্লিষ্টরা প্রত্যাশা করছেন, দ্রুত এ সেতুর কাজ শুরু হবে। সভায় আরো একটি সেতুর কথা উঠে আসে। সেটা হলো শহরের ৫নং খেয়াঘাট এলাকাতে। প্রায় ৫শ কোটি টাকা ব্যায়ের ওই সেতুর সকল দাপ্তরিক কাজ প্রায় শেষ। এখন শুধু সরকার অনুমোদন দিলেই শুরু হবে কাজ। বন্দরবাসী মনে করেন, তিনটি সেতু হলে বদলে যাবে বন্দরের চিত্র। ঘটবে আরো উন্নয়ন। হতে পারে শিল্পায়নও। এটা এখন শুধু অপেক্ষার পালা। নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীর যানজট আর কর্মব্যস্ত শহরের মধ্যে বন্দরের পরিবেশ অনেকটাই ভিন্ন। সে কারণে ওই সেতুর কারণে সেখানেও বদলে যাবে পুরো চিত্র। এদিকে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী মার্চ থেকে নারায়ণগঞ্জের সৈয়দপুর-মদনগঞ্জ দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে স্বপ্নের শীতলক্ষ্যা সেতুর নির্মাণ কাজ। অন্যদিকে সিটি করপোরেশনও করতে যাচ্ছে আরো দুটি সেতু। বন্দরের নবীগঞ্জ এলাকার কায়সার বলেন, তিনটি সেতু এখনো অকল্পনীয়। তবে সেটা বাস্তবিক হলে বদলে যাবে পুরো চিত্র। তখন বন্দর আরো আধুনিক হবে। বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থাই হবে বন্দরের উন্নয়নের মূল জিনিস। শহরের খানপুর এলাকার সাইফুউদ্দিন জানান, তিনি থাকেন শহরের খানপুরে। কিন্তু বন্দরে তিনি জায়গা কিনেছেন। যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে তিনি সেখানে বসতি নির্মাণ করতে পারেনি। তবে এবার সেতু নির্মাণ হলে তিনি সেখানে বসতি করবেন।
এই বিভাগের আরো খবর