সিদ্ধিরগঞ্জ থেমে নেই ফেন্সি হান্নানের মাদক ব্যবসা

প্রকাশিত: ১৯:১৬, ২ অক্টোবর ২০২২

সিদ্ধিরগঞ্জ থেমে নেই ফেন্সি হান্নানের মাদক ব্যবসা

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের একাধিক মাদক মামলার আসামী ছোট ভাই মান্নানকে (৩০) পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও ধরা ছোয়ার বাহিরে রয়ে গেছে একাধিক মামলার আসামী বড় ভাই হান্নান প্রধান (৩২) ওরফে ফেন্সি হান্নান।

অভিযুক্ত হান্নান প্রধান ও মান্নান প্রধান আপন দুই ভাই। তারা চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তরের ইউসুফ আলীর ছেলে। বর্তমানে পরিবার নিয়ে নাসিক ৬নং ওয়ার্ড সুমিল পাড়া এলাকায় বসবাস করছেন তারা। এলাকায় হান্নান প্রধান  বর্তমান কাউন্সিলর মতির সহযোগী হিসেবে পরিচিত। 

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হান্নান প্রধানের বিরুদ্ধে হত্যা ও মাদক সহ মোট ১২ টি মামলা রয়েছে। অপর দিকে তার ভাই মান্নানের নামে হত্যার চেষ্টা ও মাদক সহ মোট সাত থেকে আটটি মামলা রয়েছে। 
এছাড়া র‍্যাব-১১ এর একটি টিম সিদ্ধিরগঞ্জে আটি হাউজিং এলাকায় হান্নানের চোরাই তেল ব্যবসার আখড়ায় অভিযান পরিচালনা করে,  সেখান থেকে ১০ হাজার লিটার চোরাই জ্বালানি তেলসহ একটি ট্যাংকলড়ি আটক করে র‍্যাব-১১। এ সময় গ্রেফতার এড়াতে গাঢাকা দেয় হান্নান প্রধান। পরে র‍্যাব বাদী হয়ে হান্নানের বিরুদ্ধে মামলাও করে। এরআগেও একবার অস্ত্রসহ র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল ফেন্সি হান্নান। 

জানা যায়, মান্নানকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করলেও মান্নানের বড় ভাই হান্নান প্রধান রয়েছেন এখনও বহাল তবিয়তে। হান্নান নিজে থাকে আড়ালে। ছোট ভাই মান্নান প্রধান ও বাত্তি মিজান সহ কয়েকজন সহযোগী দিয়ে চালাচ্ছে বিশাল মাদক ব্যবসা। 

এদিকে গত কয়েক দিন আগে ১ কেজি গাঁজাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী শাহীনকে আটক করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ । সেই মাদক ব্যবসায়ী শাহীন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসির নিকট জবানবন্ধি দেয় যে, আটককৃত গাঁজার মালিক   মাদক ব্যবসায়ী ফেন্সি হান্নানের ভাই মান্নান প্রধানের।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেপরোয়া হয়ে উঠে হান্নান প্রধান। সে প্রতিশোধ নিতে সুযোগ খুঁজতে থাকে।যার প্রেক্ষিতে গত ২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় শাহীনকে একা পেয়ে ধারালো চাকু দিয়ে কুপিয়ে আহত করে বলে অভিযোগ করেন আহত শাহীন। এই ঘটনায় সে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায়   মাদক ব্যবসায়ী ফেন্সি  হান্নান প্রধানকে প্রধান আসামী করে ও তার ভাই মাদক ব্যবসায়ী মান্নান প্রধানসহ আরো ১০জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন(মামলা নাম্বার-১১)।


এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সূত্রমতে  এ এলাকায় হান্নানের নেতৃত্বে এ পর্যন্ত ২০টিরও বেশি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী। হান্নান ও মান্নান প্রধান আপন দুই সহোদর এলাকায় ফেন্সিডিল, ইয়াবা ব্যবসায়ী, অবৈধ চোরাই তেল ব্যবসায়ী ও কিশোরগ্যাং লিডার হিসেবে পরিচিত বলে জানা যায় । হান্নান ও মান্নান প্রধানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় প্রায় ডজন খানেক  মামলা রয়েছে। এর আগে হান্নান পিস্তলসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়ে জেলেও গিয়েছিলো। ২০১৯ সালেও দুই গ্রুপের সংঘর্ষের একটি মামলায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন হান্নান প্রধান।তখন আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায়। বেশ কয়েক দিন জেলে থেকে আবারও জামিনে বের হয়ে শুরু হয় তার অপরাধ জগতের কাজকর্ম।

এবিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মশিউর রহমান পিপিএমবার জানান,  হান্নানের ভাই মান্নান কারাগারে আছেন। হান্নানকেও আমরা ধরার চেষ্টা করছি। তিনি আরো বলেন, পুলিশের সাথে কোনো মাদক ব্যবসায়ীর সম্পর্ক নাই। পুলিশ সর্বদা মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে। মাদকের সাথে পুলিশের কেউ জড়িত থাকে তাহলে তাকেও গ্রেফতার করা হবে। মাদক ক্রয় বিক্রয় কারীদের সাথে কোনো আপস হবে না।