শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

রমজানের ভোগ্যপন্যের লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধি, কেজি প্রতি ১০ থেকে ১২ টাকা বৃদ্ধি

প্রকাশিত: ২১ মে ২০১৭   আপডেট: ২১ মে ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪ ডটকম) : কয়েক দিন পরই রমাজান। এরই মধ্যে রমজানের ভোগ্যপন্যের বৃহৎ পাইকারি বাজার নিতাইগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকারী বাজারে রমজানের নিত্যপন্যের দাম বেড়েই চলছে। তবে গত দুই বছর প্রশাসনের নজরদারি ও অভিযানের কারনে নতুন কৌশলে ব্যবসায়ীরা পন্যের দাম বাড়াচ্ছেন। রমজানের বেশ আগে থেকেই দফায় দফায় নিত্যপন্যেও দাম বাড়িয়েছেন তারা। আন্তর্জাতিক বাজারে সহনীয় দাম থাকা সত্বেও প্রশাসনের নজর এড়াতে আগেভাগে দাম বাড়ানোর অপকৌশল প্রয়োগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। রমজানের জন্য ভোগ্যপণ্যের আমদানি ও মজুদ মোটামুটি শেষ। আমদানিকারক থেকে পাইকারি ব্যবসায়ী পর্যায়ে বিক্রি শেষ পর্যায়ে। এর মধ্যে পাইকারি থেকে খুচরা বাজারে ছোলা, সয়াবিনসহ বেশকিছু পণ্যের বিক্রিও শুরু হয়ে গেছে। আর শুরু থেকেই ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন পণ্যের দামও বেড়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ছোলার দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে চাল, ডাল, ছোলা ও চিনির দাম বেড়েছে কেজিতে প্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা। তবে অপরিবর্র্তিত রয়েছে ডিম ও মুরগির দাম।  রোববার নগরীর প্রধান পাইকারি বাজার নিতাইগঞ্জ, দিগু বাবুবাজারসহ আরো কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিন দেখা যায়, গত সপ্তাহে ছোলা প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা বিক্রি হতো । এ সপ্তাহে তা ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। চিনি গত সপ্তাহে ৬৪ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হলেও চলতি সপ্তাহে তা ৬ থেকে ১০ টাকা বাড়িয়ে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজারেও চড়া ভাব লক্ষ্য করা গেছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি রুই বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়। এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। প্রতি কেজি ইলিশ ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা। গত সপ্তাহে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা। খাসি প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা। দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৩৭০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিম (ফার্ম) প্রতি হালি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। সাধারণ মানের প্রতি কেজি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। এদিকে, নাজির/মিনিকেট (সাধারণ মানের) প্রতি কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা, উত্তম মানেরটা বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা আর মাঝারি মানের প্রতি কেজি ৪৬ থেকে ৫০ টাকা। পাইজাম/লতা (সাধারণ মানের) প্রতি কেজি ৪৬-৪৮ টাকা, উত্তম মানের প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫০। মোটা/ স্বর্ণা/ চায়না ইরি প্রতি কেজি ৪২ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আটা বিক্রি হচ্ছে ২৪ থেকে ৩২ টাকা, সাদা খোলা আটা প্রতি কেজি ২৪ থেকে ২৬ টাকা, প্যাকেট আটা ৩০ থেকে ৩২ টাকা। ময়দা প্রতি কেজি ৩৪ থেকে ৪২ টাকা, ময়দা (খোলা) প্রতি কেজি ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা, ময়দা (প্যাকেট) প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪২ টাকা। সয়াবিন তেল (লুজ) প্রতি লিটার ৮৮ থেকে ৯৫ টাকা, সয়াবিন তেল (বোতল) ৫ লিটার ৪৯০-৫২০ টাকা, সয়াবিন তেল (বোতল) ১ লিটার ১০০ থেকে ১০৬ টাকা, পাম অয়েল (লুজ) প্রতি লিটার ৭০ থেকে ৭২ টাকা, পাম অয়েল (সুপার) প্রতি লিটার ৭৪ থেকে ৭৫ টাকা। গত সপ্তাহেও তা একই দামে বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহেও এসব পন্যের বিক্রয়দর সহনীয় ছিলো। অপরদিকে, মশুর ডাল প্রতি কেজি ৭৫ থেকে ১৩৫ টাকা। ডাল (তুরস্ক/কানাডা-বড় দানা) গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ৭৫ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হয়েছে। এ সপ্তাহে ৫ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা। মাঝারি ধরনের ডাল (তুরস্ক/কানাডা) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা। ডাল (দেশি) প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকা। ডাল (নেপালি) প্রতি কেজি ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা। মুগ ডাল (মানভেদে) প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১৩৫ বিক্রি হয়েছে গত সপ্তাহে। আলু প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৫ টাকা, রসুন ১০০ থেকে ২৪০, শুকনা মরিচ ১৫০ থেকে ২০০, হলুদ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, আদা (আমদানি) মানভেদে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ১১০ টাকা, জিরা প্রতি কেজি ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, দারুচিনি ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকা, এলাচ প্রতি কেজি ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা। ধনেপাতা ১২০ থেকে ১৫০ ও তেজপাতা প্রতি কেজি ১৩০ টাকা। তবে শাক-সবজিসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। ঢেঁড়শ, শশা, করলা, লতি, ঝিঙা, পেঁপে, আলু, পটল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। নগরীর বড় পাইকারি বাজারের সভাপতি আলহাজ্ব কাদির ভূইয়া যুগের চিন্তা ২৪ ডটকমকে বলেন, আমাদের ঢাকা থেকে আমদানি করতে হয় রমজানের ভোগ্যপন্য। তাই ওখানের বড় বড় ব্যবসায়ীরা  রমজানের ভোগ্যপন্য যে দাম নির্ধারিত করে সে দামেই আমাদের বিক্রয় করতে হয়। দিগুবাবু বাজারের ব্যবসায়ী সমতীর সভাপতি হাজী এখলাস উদ্দিন বলেন, নারায়নগঞ্জ শহরের নিতাইগঞ্জ হচ্ছে পাইকারি বাজারের মূল স্তম্ভ। আর রমজানের ভোগ্যপন্যে মেন আমদানিকারক হল তারা। রমজানের এক মাস আগেই তারা গোডাউন বরে রাখে রোজার যাবতিয় ভোগ্যপন্য। এখান থেকে পন্যেসামগ্রী  নিয়ে নগরীর ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা খুচরা বিক্রয় করে।  তাই দামের ব্যাপারে তাদের কিছু করার থাকেনা।
এই বিভাগের আরো খবর