শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বাবরি মসজিদ : মুসলমান-হিন্দুদের আপোশ করতে বলল আদালত

প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের অযোধ্যায় রাম মন্দির ও বাবরি মসজিদ বিতর্ক আদালতের বাইরে মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলেছে সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার দুই পক্ষকে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করতে বলেছে আদালত।ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা সুব্রামিনিয়াম স্বামী সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন জানিয়েছিলেন যাতে অযোধ্যা মামলার দ্রুত শুনানি হয়। এই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি জেএস খেহর জানিয়েছেন, ধর্ম আর বিশ্বাসের সঙ্গে এই সমস্যা জড়িত। তাই এরকম একটি সংবেদনশীল বিষয়ের সমাধান একমাত্র আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই হতে পারে।তিনি বলেছেন, ‘এটা ধর্ম ও ভাবাবেগের বিষয়। প্রথমে একসঙ্গে বসুন এবং মীমাংসায় পৌঁছানোর চেষ্টা করুন। দু’পক্ষই মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করুন এবং বৈঠক করুন।’ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটাতে আগ্রহী হলে তিনি নিজেও মধ্যস্থতা করবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। ৩১ মার্চের মধ্যে দুই পক্ষকে এর জন্য আলোচনায় বসতে হবে। আর আলোচনায় যদি সমাধান না হয়, তা হলে আদালত পদক্ষেপ নেবে বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি জেএস খেহর।প্রায় ২৫ বছর ধরে ঝুলে রয়েছে রাম মন্দির-বাবরি মসজিদ বিতর্ক। অযোধ্যার ওই বিতর্কিত জমির মালিকানা কার, তা এতো দিনেও নির্ধারণ করা যায়নি। ২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই মামলায় যে রায় দিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্ট পরে তাতে স্থগিতাদেশ দেয়। এলাহাবাদ হাইকোর্ট তার রায়ে বলেছিল, যে জায়গায় রামচন্দ্রের মূর্তি স্থাপিত হয়েছে, সেখানে মূর্তি-ই থাকবে। গোটা জমি তিন ভাগ হবে। একটি অংশ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটি এই রায় মানেনি। তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। সেই থেকেই ফের ঝুলে রয়েছে বিতর্কের মীমাংসা।রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্কের সঙ্গে যে পক্ষগুলি সরাসরি যুক্ত, তাদের অনেকের কাছেই অবশ্য আদালতের এই নির্দেশ গ্রহণযোগ্য হয়নি। বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ কাসিম ইলিয়াস বলেছেন, ‘আলোচনা ও মধ্যস্থতার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে এবং আবার নতুন করে তা হওয়া সম্ভব নয়।’ রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার রামলালার কৌঁসুলি রঞ্জনা অগ্নিহোত্রী বলেছেন, রাম মন্দিরের পক্ষে রায় ছাড়া অন্য কোনো কিছু মেনে নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই মামলায় যে রায় দিয়েছিল, তাতে অযোধ্যার বিতর্কিত জমিকে তিন ভাগে ভাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। রঞ্জনা অগ্নিহোত্রী বলেছেন, ‘জমির তিন ভাগ করার রায়ই যখন আমরা মেনে নেইনি, তখন আলোচনার প্রস্তাবে রাজি হওয়ার প্রশ্ন আসছে কেন?’এতো বছর যখন অপেক্ষা করেছি, তখন আরও কয়েক বছর অপেক্ষা করতে পারব। কিন্তু আদালতকেই রায় দিতে হবে। যদি আদালতের পক্ষে রায় দেওয়া কঠিন হয়, তা হলে অর্ডিন্যান্স জারি করে রাম মন্দির তৈরির পথ খুঁজে বের করতে হবে।’
এই বিভাগের আরো খবর