বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ধর্ষক ও নিপীড়কের শাস্তির দাবীতে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃকি জোটের মানববন্ধন

প্রকাশিত: ৩ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ৩ আগস্ট ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪ ডটকম): গত ১৭ জুলাই বগুড়ায় এস এসসি পাশ করা এক ছাত্রীকে ধর্ষন এবং পরবর্তিতে প্রতিবাদ করলে কিশোরী ও তার মাকে ধরে নিয়ে মাথার চুল ফেলে দেয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা সহ সাড়া দেশে ব্যাপক হারে ধর্ষনের অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় সকল ধর্ষক ও নিপীড়কদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে ৩ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) বিকেল নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে মানব বন্ধন করে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। “বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন, ধর্ষক ও নিপীড়কের বিরুদ্ধে  সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলুন” এই দাবীতে জোটের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় সভায় নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন রাজনৈতীক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সচেতন নাগরিকগণ সমাবেশে যুক্ত হন। নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি ভাবানি সংকর রায়, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক নিখিল দাস, নাগরিক কমিটির সভাপতি এবি সিদ্দিক, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, নারী সংহতি জেলা সম্পাদক পপি রাণী সরকার, জেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরিফ উদ্দিন সবুজ, ঐক্য ন্যাপ জেলা সভাপতি আওলাদ হোসেন, খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রথিন চক্রবর্তী সহ সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতা কর্মীরা। নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরিফ উদ্দিন সবুজ তার বক্তব্যে বলেন, সাম্প্রতিক কালে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা বেড়েই চলেছে। বগুড়ায় মেয়েকে ধর্ষন করে মা এবং মেয়েকে ন্যাড়া করে সামাজিক ভাবে লাঞ্চিত কারার ঘটনা ঘটে। এছাড়াও কিছুদিন আগে ঢাকার বনানিতে প্রভাবশালী বাবার ছেলের ধর্ষনের ঘটনাও আমাদের কারও দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি। এ সকল ঘটনা বারবার তখনি ঘটে যখন পূর্বের অপরাধিরা শাস্তি পায় না। এটি একটি বিচারহীনতার সংস্কৃতির প্রবণতা। এসকল ধর্ষনের পেছনে বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাবকেও আমরা এড়াতে পাড়ি না। আমরা দেখতে পাই বিদেশি বিভিন্ন টিভি চ্যালেনসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় নারীদের যেভাবে যৌন বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করা হয় এর ফলেও ধর্ষনের মত অপরাধ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। আর আগুনে ঘি এর কাজ করে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি। এই সকল অপসংস্কৃতির অবসান না হলে ধর্ষনের মত অপরাধের সমাধান করা সম্ভব নয়। নারী নেত্রী পপি রাণী সরকার বলেন, বগুড়ায় মা মেয়েকে ধর্ষণ ও লাঞ্চণার যে ঘটনা জাতি প্রত্যক্ষ করলো তা একটি ন্যাক্কার জনক ঘটনা। একদিকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী নারী ক্ষমতায়নের কথা বলেন। আর অন্য দিকে তাঁর দলীয় কর্মীরা নারীদের ধর্ষনের মত কাজে পারদর্শি হচ্ছেন। এ ধরনের ঘটনা একটি প্রবল ক্ষমতার অপরাধ। অপরাধ করার ক্ষমতা নয়। একজন ধর্ষন তার প্রবল ক্ষমতার প্রদর্শনের জন্যই নারীদের উপর নির্যাতন নিপীড়ন চালায়। ১৯৭১ সালেও আমরা দেখেছি পাকিস্তানিরা কিভাবে তাদের উদ্ধত ক্ষমতা প্রদর্শনে বাংলার হাজারো নারীদের ধর্ষণ করেছে। কিন্তু স¦াধীনতার ৪ দশক পরেও আমরা দেখতে পাই ক্ষমতাসীনদের একই চেহারা। এ চেহারার পরিবর্তন করতে পারে কেবল জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তি। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, ছাত্র ফেডারেশন জেলা সভাপতি মশিউর রহমান,অনন্যা সাংস্কৃতিক একাডেমীর সংগঠক সুমাইয়া সেতু, ছড়াকার আহসেদ বাবলু, গায়েন শিল্পী তারিক মাহমুদ সহ আরো অনেকে।
এই বিভাগের আরো খবর