বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১২ ১৪৩১

নারায়ণগঞ্জ ৫ আসন : প্রার্থী দল নয়, জয়ী হবে আইভির সবুজ সংকেতে!

প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০১৭   আপডেট: ১৬ জুন ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪ ডট কম) :  নারায়ণগঞ্জ সদর ও বন্দর এলাকা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ সংসদীয় ৫ আসন। আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও অন্যান্যদলসহ এ আসনের সম্ভাব্য পার্থী প্রায় এক ডজন। পার্থী যে দলেরই হোক, এ আসনটিতে জয়ের জন্য লাগবে সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভির সবুজ সংকেত। যেহেতু সদর ও বন্দরে দল মতের উর্ধ্বে ওঠে সকল মহলের কাছে গ্রহনযোগ্য একমাত্র ব্যক্তিটি হচ্ছেন আইভি। এ অঞ্চলটিতে সিটি মেয়রের রয়েছে আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা। রাজনৈতিক মহলে একটি বিষয় জোরেসোড়েই আলোচিত হচ্ছে যে, যে দলেরই পার্থী হোক  ৫ আসনে জয়ের জন্য আইভির সমর্থন জরুরি। নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনে আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন আওয়ামীলীগের মহানগরের সাধারন সম্পাদক এড. খোকন সাহা, জাতীয় শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রমিক নেতা শুক্কুর মাহমুদ, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এড. আবু হাসননাত মো. বাদল, যুব লীগের জেলা সভাপতি আব্দুল কাদির সহ মহানগর যুবলীগের সাধারন সম্পাদক আহম্মদ আলীরেজা উজ্জল। শুধুমাত্র ভোট ব্যাংক হিসেবেই নয়, আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তিতেও আইভির সমর্থন প্রয়োজন হবে তাঁদের। কেননা, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের খুব ভাল ভাবেই জানা আছে সদর  ও বন্দরে  আইভির একতরফা জনসমর্থনের কথা। তাছাড়াও দলটির জেলা কমিটিতে বর্তমান সহ সভাপতির দায়িত্বে আছেন, ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভি। দলীয় পদ ও ৫ আসনে একচ্ছত্র জনপ্রিয়তার ফলে এ আসনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে তাঁর পছন্দই হবে কেন্দ্রের পছন্দ। তাছাড়াও এ আসনটিতে আওয়ামীলীগের পার্থীকে জয়ী করে আনতে দায়িত্ব দেয়া হতে পারে আইভিকে। সে বিবেচনায় আওয়ামীলীগের মনোয়নের ক্ষেত্রে আইভিই এ আসনের প্রধান ভুমিকা পালন করবেন। ৫ আসনে আরেক জনপ্রিয় নেতা সাবেক সংসদ সদস্য এসএম আকরাম। তিনি জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি হলেও নানান অভিমানে বর্তমানে তিনি আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে অনেকটা নিস্ক্রীয়। রাজনীতিতে নিস্ক্রীয়তা থাকলেও ৫ আসনের সাধারন ভোটারদের মনে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসা আগের মতোই সক্রীয়।  আইভির ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত আকরাম নিজে নির্বাচনে না আসলে তাঁর সমর্থনও থাকবে আইভির পছন্দের প্রার্থীর প্রতি। তবে আকরামের নির্বাচনে আসা পাল্টে দিতে পারে নানা সমীকরন। আকরাম ছাড়াও নারায়ণগঞ্জের সুশীল সমাজে আইভির গ্রহন যোগ্যতার কথা সকলেরই জানা। দীর্ঘদিনের সন্ত্রাস বিরোধী অবস্থানের কারনে নারায়ণগঞ্জ সুশীল সমাজ সাধারন মানুষের মধ্যে খুব ভাল ভাবেই স্থান করে নিয়েছে। নারায়ণগঞ্জ ৫ আসন মুলত জাতীয় পার্টি নেতা নাসিম ওসমানের নির্বাচনী আসন হিসেবে পরিচিত। এ আসন থেকে তিনি ৩ বার সংসদে গিয়েছেন। ২০১৩ সালে তাঁর মৃত্যুর পর এ আসনের সংসদ সদস্য হন তারই ছোট ভাই সেলিম ওসমান। সেলিম ওসমানও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য। আকরামের অভিমানের পর এ এলাকায় আওয়ামীালীগের সাংগঠনিক অবস্থা শোচনীয়। তাছাড়াও জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান নানা বিতর্কের সৃষ্ঠি করে নিজের পাশাপাশি দলকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। সেলিমের বিতর্ক ও জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক নিস্ক্রীয়তার ফলে এ আসনটিতে জাতীয় পার্টির জনপ্রিয়তায় বিশাল ভাটা পড়েছে। দলকে সংগঠিত রাখতে না পারা ও বিতর্কের কারনে সেলিম ওসমানের ওপর ক্ষিপ্ত জাতীয় পার্টির অনেক মাঠ পর্যায়ের নেতা কর্মী। অন্য দিকে  মেয়র আাইভি ২০১১ সালের নির্বাচনে জয়ের পর উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিয়েছেন বন্দর এলাকায়। যার ফলাফলও পেয়েছেন হাতে নাতে। ২০১১ এর পর ২০১৬ সালেও প্রায় অপ্রতিদন্ধী জনপ্রিয়তা নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। কাজের মধ্য দিয়ে এখনও ধরে রেখেছেন তাঁর আকাশ চুম্বি জনপ্রিয়তা। জনগনের মেয়র হিসেবে তার এই জনপ্রিয়তার জন্যই ৫ আসনের প্রার্থীর জয়ে তাঁর সবুজ সংকেত অনেক বেশি জরুরি। এমনটাই মনে করছেন নারায়ণগঞ্জের রাজনীতি সচেতন মহল।
এই বিভাগের আরো খবর