বৃহস্পতিবার   ২৮ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৪ ১৪৩০

হাজীগঞ্জে দূর্গন্ধযুক্ত কালচে নোংরা পানি সরবারহ করছে ওয়াসা

প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪ ডটকম) : নগরীর হাজিগঞ্জ এম সার্কাস এলাকায় নিত্য দূর্গন্ধযুক্ত কালচে নোংরা পানি সরবারহ করছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও ওই এলাকায় প্রায় সময়ই থাকে পানি সংকট। ফলে দু’বেলা  পানি সংগ্রহের জন্য এলাকাবাসীকে লাইন ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে এসি আই ইন্ডাষ্ট্রিজ এ গভীর নলকূপ থেকে সরবারহকৃত পানির সংযোগ পাইপ স্থানে। দীর্ঘ সময় লাইনে দাড়িয়ে পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন গৃহবধু, শিক্ষার্থী ও নারী শ্রমিক কর্মীরা। ফলে অনেকেই বাধ্য হচ্ছে ওয়াসার দূর্গন্ধযুক্ত পানি ফুটিয়ে ব্যবহার করছে। ওয়াসার বিশুদ্ধ পানির পানির সংকটে সারা বছরই এসিআই থেকে দীর্ঘ লাইন ধরে এলাকাবাসী পানি সংগ্রহ করছে বলে জানান এসিআই প্রধান ফটকে কর্মরত এক নিরাপত্তা কর্মী। এদিকে ওয়াসার এ পানি ব্যবহার করে শিশু বৃদ্ধাসহ অনেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ওই এলাকায় শ্বাসরোগ, ডায়রিয়াসহ নানা চর্মরোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, হাজিগঞ্জ বিশেষ করে এম সার্কাস এলাকায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ওয়াসার চাহিদার তুলনায় যতটুকু পানি পাওয়া যায় তাও আবার দুর্গন্ধযুক্ত ও কালচে নোংরা পানি। পানি ফুটালেও থেকে যাচ্ছে দূর্গন্ধ। এম সার্কেস এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী কুতুবুদ্দিন কুতুব বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকাবাসী বিশুদ্ধ পানি সংকটে ভুগছে। দেখার কেউ নেউ। গেল সপ্তাহে মহিলা কাউন্সিলর মিনোয়ারা বেগম পরিদর্শন করে বলেছেন আমাকে কিছুদিনের সময় দিন । আমি মেয়র আইভি আপাকে এনে স্বচক্ষে আপনাদের বিশুদ্ধ পানির সংকট তুলে ধরবো। এরপর থেকে আর কোন খোঁজ নেই। মধ্যবয়সী একজন নারীর নাম জানতে চাইলে তিনি নিজেকে রানীর মা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, এই নোংরা, দূর্গন্ধ, কালচে পানির জন্য আমাদের বাড়িতে আমার মেয়ের জামাইরা বেড়াতে আসে না। ময়লা আর ঝাঝালো গন্ধযুক্ত পানি দিয়ে মুখ ধুলেও চোখ জ্বালাপোড়া করে। একই এলাকার ডাক্তার হাসান মাহমুদ বলেন, এখানকার ওয়াসার পানি নদী থেকে সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। শীতলক্ষ্যা থেকে যে প্রক্রিয়ায় পানি সংগ্রহ করা হয় তাতে পানি বিশুদ্ধ হয় না। এলাকাবাসীর অভিযোগ বহুবার ওয়াসা কর্তৃপক্ষসর স্থানীয় কাউন্সিলরদের জানালেও এর কোনো সুরাহা হচ্ছে। এরপরও মাসের পর মাস ওয়াসাকে ন্যূনতম পানির বিল ৩৫০ টাকা দিতে হচ্ছে তাদের। এ ব্যাপারে স্থানীয় নারী কাউন্সিলর মিনোয়ারা বেগম যুগের চিন্তা ২৪ ডটকমকে জানান, আমিও ওই এলাকার একজন বাসিন্দা। এ বিশুদ্ধ পানির দূর্ভোগের আমিও একজন ভুক্তভোগী। আমাকেও এই অসহনীয় বিশুদ্ধ পানির অভাবের যন্ত্রনা পোহাতে হয়। এব্যপারে আমি আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। গেল সপ্তাহে সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এলাকা পরিদর্শন করি। বিশুদ্ধ পানির সংকট মোকাবেলায় মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভিকে অবহিত করে তাঁকে এলাকায় নিয়ে এসে অতিদ্রƒত সমস্যার সমাধান করা হবে। অন্যদিকে এব্যাপারে কাউন্সিলর জমসের আলী ঝন্টুর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এদিকে এলাকাবাসী বলছে পানির সমস্যা দূরীকরন তো দুরে থাক নির্বাচনে কাউন্সিলর ঝন্টু উন্নয়নের আশ্বাস দিলেও এখস পর্যন্ত উন্নয়নের কোনে আশার বানীও দেননি। এ বিষয়ে জানতে ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলীর মোবাইলে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে নারায়ণগঞ্জ অফিসের ল্যান্ড ফোন (৭৬৪৮৪৮৮৫) এ ফোন দিলে জনৈক ব্যক্তি ফোন তুলে বলেন এ সমস্যা নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরদের সাথে আলোচনা হয়েছে। কবে কিভাবে এ সমস্যার সমাধান হবে জানইতে চাইলে তিনি অফিসে চায়ের দাওয়াত দেন অথচ এ বিষয়ে কোন মত প্রকাশ করতে রাজি হননি। এমনকি তাঁর নাম পদবী জানতে চাইলে তাও বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এই বিভাগের আরো খবর