বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১১ ১৪৩১

৫৪ তে মেয়র আইভী, শুভ জন্মদিন

প্রকাশিত: ৫ জুন ২০১৯  

শামীমা রীতা (যুগের চিন্তা ২৪) : ৬ জুন। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর জন্মদিন । ১৯৬৬ সালের এই দিনেই শীতলক্ষ্যা বিধৌত প্রাচ্যের ড্যান্ডিতে আলী আহাম্মদ চুনকা এবং মমতাজ বেগমের ঘর আলোকিত করেন বাংলাদেশের প্রথম এই নারী মেয়র। সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আলী আহমদ চুনকার পাঁচ সন্তানের মধ্যে আইভী প্রথম।

 

রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম হলেও প্রথম জীবনে চিকিৎসা সেবাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন।  পরবর্তীতে বাবার আদর্শকে বুকে ধারণ করে রাজনৈতিক জগতে পা রাখেন নারায়ণগঞ্জের এই লৌহ মানবী। সন্ত্রাস,গড ফাদারতন্তসহ অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রামী এই নারী গণমানুষের স্বার্থের প্রতিটি লড়ায়ে নেতৃত্ব দিতে থাকেন।

নানান ঘাত প্রতিঘাত মোকাবেলা করে এগিয়ে যাওয়া ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ধীরে ধীরে হয়ে উঠেন নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রিয় ‘আইভী আপা’। আজ তার ৫৪ তম জন্মদিন। যুগের চিন্তা পরিবারের পক্ষ থেকে এই সংগ্রামী নারীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। 

 

নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রিয় এই মেয়রের সংক্ষিপ্ত জীবনী যুগের চিন্তা ২৪ এর পাঠকদের জন্য তুলে দেয়া হলো : 

শিক্ষা জীবন:  

সেলিনা হায়াৎ আইভীর শিক্ষা জীবন শুরু হয় দেওভোগ আখড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে। পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরী স্কুল ও মর্গ্যান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।

 

মর্গ্যান গার্লস থেকেই ১৯৭৯ সালে ট্যালেন্টপুলে জুনিয়র স্কলারশিপ এবং ১৯৮২ সালে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় স্টারমার্কসহ উত্তীর্ণ হন। 

 

উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ১৯৮৫ সালে রাশিয়ান সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানে শিক্ষা গ্রহণের জন্য ওডেসা পিরাগোব মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন তিনি।

 

১৯৯২ সালে কৃতিত্বের সাথে চিকিৎসা ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯২-৯৩ সালে ঢাকা মিডফোর্ট হাসপাতালে ইন্টার্নি সম্পন্ন করেন ডা. আইভী। শিক্ষা জীবন শেষে ১৯৯৩-৯৪ সালে মিডফোর্ট হাসপাতালে এবং ১৯৯৪-৯৫ সালে নারায়ণগঞ্জ ২০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে অনারারি চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন তিনি। 

 

পারিবারিক জীবন : 

ডা. আইভী ১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর রাজবাড়ীর কাজী আহসান হায়াৎ-এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কাজী আহসান হায়াৎ বর্তমানে নিউজিল্যান্ডে কর্মরত আছেন।

 

পারিবারিক জীবনে তিনি দুই পুত্র সন্তানের জননী। দুই সন্তানের একজন হলেন কাজী সাদমান হায়াত সীমান্ত ও অন্যজন কাজী সারদিল হায়াত অনন্ত। বিয়ের পর তিনি স্থায়ীভাবে ১৯৯৫ সাল থেকে নিউজিল্যান্ডে বসবাস শুরু করেন।

 

সেখানে তিনি নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে মেডিক্যাল ল্যাবরেটরি সায়েন্সে অধ্যয়ন শুরু করেন। ২০০২ সালের ডিসেম্বরে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি দেশে ফিরে আসেন।  

 

কর্ম জীবন: 

প্রথম জীবনে চিকিৎসা সেবাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করলেও পরবর্তীতে বাবার আর্দশকে ধরে রেখে রাজনৈতিক জগতে পা রাখেন তিনি। যদিও স্কুল ও কলেজ জীবন হতেই বাবার সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতেন তিনি। ১৯৯৩ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদিকা ছিলেন।

 

২০০৩ সালের ১৬ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনের মাত্র ১৭দিন আগে নিউজিল্যান্ড থেকে তাকে দেশে নিয়ে আসা হয়।  আওয়ামীলীগের মনোনয়নে নির্বাচিত হন পৌর চেয়ারম্যান হিসেবে। এরই মধ্য দিয়ে তাঁর সক্রিয় রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে।

 

পৌরসভার কাজের মাধ্যমে শহরবাসীর হৃদয়ে স্থান করে নেন তিনি। এরই ফলাফল হিসেবে দলের মনোনয়ন না পেয়েও ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ শামীম ওসমানকে পরাজিত করে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। কাজের ধারাবাহিকতায় সবশেষ ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর টানা তৃতীয় বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন।

 

ধীরে ধীরে হয়ে উঠেন নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রিয় আইভী আপা।  বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বে আছেন। তিনি আলী আহাম্মদ চুনকা ফাউন্ডেশন এবং নারায়ণগঞ্জ হার্ট ফাউন্ডেশন-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য এশিয়ানের এশিয়ার ২০ নারী মেয়রের মধ্যে সাত নাম্বারে উঠে আসে মেয়র আইভীর নাম।

 

২০১৭ সালের ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগ নেতাদের মধ্যে তিনিই প্রথম উপমন্ত্রী পদমর্যাদা লাভ করেন।  ডা. আইভী তাঁর শিক্ষাগত ও পেশাগত জীবনে জার্মান, হল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইতালি, শ্রীলংকা, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া,ব্রাজিল ও ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেছেন।

এই বিভাগের আরো খবর