শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

শীঘ্রই কমবে পেঁয়াজের দাম

প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০১৯  

যুগের চিন্তা রিপোর্ট : পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক রাখতে সরকার টিসিবির মাধ্যমে খোলা বাজারে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। কিন্তু  সে সুবিধা পাচ্ছেনা নারায়ণগঞ্জবাসী। কেবলমাত্র রাজধানীতেই টিসিবি’র কার্যক্রম সীমাবদ্ধ। এখনো ৮০ টাকা কেজির নীচে নামছেনা পেঁয়াজের দাম। পাইকারী ও খুচরোতে কোন তফাত নেই। ৮০ টাকা কেজি ধরেই কিনতে হচ্ছে। 


তবে বিপদে পড়তে যাচ্ছে পেঁয়াজের মজুদদাররা। পেঁয়াজের চাহিদা কমছে। সময়মত বিক্রি করতে না পারলে পেঁয়াজে পচন ধরবে। তাছাড়া কিছুদিনের মধ্যেই দাম কমবে। যদিও পেঁয়াজের ঝাজ এখনো কমেনি। বার্মা থেকে পেঁয়াজ এনে আরও বড় ভুল হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। 

 

কেননা, জাহাজে আসতে আসতেই ২৫ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি। ১৩ সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজ রফতানি মূল্য বাড়িয়ে দেয়। পরদিন বাজারে একলাফে দাম বেড়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকা গিয়ে দাঁড়ায়। এরপর ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত পুরাপুরিভাবে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়। ওই দিন বিকালে পেঁয়াজের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। অস্থির পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দফায় দফায় বৈঠকেও কাজ হয়নি। নিয়ন্ত্রণে আসেনি পেঁয়াজের বাজার। 

 

দাম না কমায় মিসর, তুরস্ক, মিয়ানমারসহ কয়েকটি দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। এরপর দাম কমতে থাকে। তবে যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়েছে, সে তুলনায় দাম কমেছে অত্যন্ত ধীর গতিতে।

 

শহরের বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমে এলেও এখনো মানুষের নাগালের বাইরে। বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। আমদানি করা পেঁয়াজও বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। সংশ্লিষ্টরা জানান, সারাদেশে পেঁয়াজের অবৈধ মজুদ ও কারসাজি করে মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে বাজারে। যাদের কাছে দেশি পেঁয়াজের মজুদ ছিল তা ছেড়ে দিচ্ছে। এছাড়া মিয়ানমার ও মিসর থেকেও এখন পর্যাপ্ত  পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। ভারত থেকে রফতানি বন্ধের আগের এলসি করা পেঁয়াজও এসেছে।

 


দ্বিগুবাবুর বাজারের পেঁয়াজ কিনতে আসা জামিলুর রহমান বলেন, দাম বাড়ার পর দুই কেজি পেঁয়াজ কিনলাম। শুনেছি এখন দাম কিছুটা কমেছে। কিন্তু যেভাবে ভেবেছি সে হারে দাম কমেনি। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ার কোনো ইস্যু পেলে একলাফে দাম বাড়িয়ে দেন। কিন্তু সরবরাহ বাড়লে আর দাম কমাতে চান না তারা। গত মাসের শুরুতে পেঁয়াজ কিনেছি ৩০ টাকা কেজি দরে। এখন লাফিয়ে লাফিয়ে দাম  বেড়ে দাঁড়ায় ১২০ টাকা কেজি। আর এখন হাঁকডাক দিয়ে দাম কমানোর ঘোষণা দিয়ে এখন দেখি ৮০ টাকা কেজি দরে। 

 

নুরুল ইসলাম নামে আরেক ক্রেতা বলেন, দাম আর কমলো কই। কেজিতে বেড়েছে ৮০ টাকা এখন কমেছে ৩০ টাকা। সবই ব্যবসায়ীদের কারসাজি। 

 

দ্বিগুবাবু বাজারের একজন আড়তদার বলেন, আমদানিকারক দাম না কমালে আমরা কমাব কীভাবে। আর হয়তো সপ্তাহ খানেকের মধ্যে দাম আরো কমে আসবে বলে শুনেছি।


খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, আড়তগুলোতে পেঁয়াজের ব্যাপক সরবরাহ। কিন্তু সেই অনুপাতে ক্রেতা নেই। আড়ৎদার নারায়ণ চন্দ্র বলেন, বাজারে এখন পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। ভারত হঠাৎ করে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করায় সাময়িক সে সমস্যা হয়েছিল তা কেটে গেছে। এখন মিয়ানমার ও মিসর থেকে প্রচুর পেঁয়াজ আসছে। দেশি পেঁয়াজের বাজারে সরবরাহ ভালো।তবে বাজারে কয়েকদিন আগেও পেঁয়াজের যে চাহিদা ছিল এখন তা নেই। তবে মাস খানেকের মধ্যে পেঁয়াজের দর আরো কমবে।

 

পেঁয়াজের দামের বিষয়ে একজন ব্যবসায়ী বলেন, মিয়ানমার ও মিসর থেকে পেঁয়াজ আসছে। ফলে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ছে। এতে দাম কিছুটা কমেছে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই পেঁয়াজের দাম আরো কমবে। তবে মিয়ানমারের পেঁয়াজ তড়িঘড়ি আমদানি করা ঠিক হয়নি। কারণ সেখান থেকে আসা প্রায় ২৫ শতাংশ পেঁয়াজ নষ্ট।

এই বিভাগের আরো খবর