বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪   বৈশাখ ১০ ১৪৩১

খালেদা জিয়ার মুক্তিই শেষ কথা 

প্রকাশিত: ৩১ আগস্ট ২০১৮  

এড তৈমূর আলম খন্দকার : বিস্মিল্লাহির রাহমানির রাহিম। বিএনপি’কে জাতীয় নির্বাচনে আনার আহবান সরকারের মায়া কান্না আজ জাতির সামনে অত্যান্ত পরিষ্কার। সরকারের অনেক মন্ত্রীর মূখে শোনা গেছে যে, বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে না আসলে মুসলিমলীগ হয়ে যাবে, মায়াবতী কন্ঠে বলছেন ন্যাপ হয়ে যাবে ইত্যাদি, ইত্যাদি। বিএনপি’কে নির্বাচনে আসতে আহবান জানিয়ে বলা হতো বিভিন্ন মূখ রোচক বক্তব্য। প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ ইং সালে দলীয় সম্মেলনে এমনটিই বলেছিলেন যে, তিনি আর প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন দেখতে চান না।

৫ই জানুয়ারির ভোট ও ভোটার বিহীন নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, ঐ নির্বাচন ছিল নিয়ম রক্ষার নির্বাচন মাত্র। অন্যদিকে বিদেশীদের নিকটও তিনি অভিমত প্রকাশ করেছিলেন যে, সর্বদল গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের তিনি আশাবাদী। কিন্তু সম্প্রতি সরকারী ইন্দনে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা ও বিচারের রায় সংক্রান্ত কিছু অগ্রীম কথা বার্তায় দৃশ্যত এটাই মনে হচ্ছে যে, সরকার বিএনপি ব্যতীত একটি জাতীয় নির্বাচনের দিকে জোর দিয়েই এগুচ্ছে এবং জোড় দিয়েই বিএনপি’কে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার সকল প্রকার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে এবং এটাকেই তারা নিরাপদ মনে করছে। বিএনপি’র চেয়ারপার্সনকে কারাবন্দী ও বিভিন্ন মামলায় জামিনের বিষয়টি দীর্ঘায়িত করার পিছনে সরকারের হস্তক্ষেপ এখন দৃশ্যমান। সরকার প্রধান ও তার পরিষদ অনেক কথাই বলেন যার সাথে বাস্তবতার কোন সামানজস্ব্য নাই বরং সাংর্ঘষিক।

যে বাঘ রক্তের স্বাদ পেয়েছে সে শিকারের ঝুকি নিবেই। এ সরকার সম্পষ্টই বুঝতে পেরেছে যে, বিনা ভোটের নির্বাচন করেও একটি গণতান্ত্রিক (সংবিধান মতে) রাষ্ট্র শাসন করা যায়। ফলে আর একটি একতরফা নির্বাচন যদি করা যায় তবে সরকার একদলীয় শাসন ছাড়াও স্থায়ীভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার সূযোগ সৃষ্টি হবে (যদি না ব্যতিক্রম কিছু না ঘটে) এবং এটাই যদি হয় তবে ভবিষ্যতে আর নির্বাচনের প্রয়োজন হবে না, বংশানুক্রমে চল্লেই হবে। পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ বিবেক দিয়ে চলে না, তারা ক্ষমতাসীনদের পাশে থেকে নিরাপদ অবস্থানে থাকতে চায়। মানুষ যদি “বিবেক” দিয়ে চলতো তবে অনেক অনাচার অবিচারের প্রতিরোধ হতো। কিন্তু প্রতিরোধ গড়ে তোলার যে অবস্থান সৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল তা এখনো দৃশ্যমান নহে। গ্যাসের দাম দফায় দফায় বৃদ্ধি পাচ্ছে, মোবাইল কল রেট বৃদ্ধি পেয়েছে, গণমানুষের ভোটাধিকার ছিনতাই হচ্ছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি লোপাট হচ্ছে কিন্তু গণমানুষের কোন রা নাই বরং বুদ্দিজীবিরা সরকারের ডামাঢোল বাজিয়ে সরকারী সুবিধা আদায় করছে। চ্যানেলগুলিও সরকারের নিয়ন্ত্রণে, ব্যতিক্রম হলেই একুশে টিভি’র মত অবস্থায় পড়তে হবে মনে করে পুরোপুরি সত্যের পথে চলতে তারা বাধা গ্রস্থ।    

২১শে আগস্ট গেনেড হামলা একটি পৈচাশিক ঘটনা। এ ঘটনায় বিচার বিএনপি চেয়েছে এবং বিবেকমান সকল মানুষেরই উচিৎ এ ঘটনার নিন্দা প্রকাশ ও বিচার চেয়ে প্রকৃত দোষী ব্যক্তির শাস্তি কামনা করা। বিএনপি সরকার এ ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের সন্ধান দাতাদের ১ কোটি টাকা পুরুষ্কার ঘোষনা করে ছিল এবং যতটুকু মনে পড়ে প্রধান অভিযুক্ত মুফতি হান্নানকে বিএনপি সরকারই গ্রেফতার করে ছিল। তারপরও রায় ঘোষনার পূর্ব মূহুর্তে তারেক রহমানকে ইঙ্গিত করে জিয়া পরিবারকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আমাদের দেশের বর্তমান নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থাকে প্রভান্বিত করবেই। পৈশাচিক ঘটনা যেমন পাপ, তেমনি প্রভাব খাটিয়ে নির্দোষ কাউকে দোষী সাব্যস্ত করাও সমভাবে দায়ী। প্রকৃত দোষী ব্যক্তি সাজা হউক, কিন্তু ক্ষমতার মসনদকে চ্যালেঞ্জ মুক্ত রাখার জন্য কোন কারণেই স্বচ্ছতা যেন কলঙ্কিত হয়ে না পড়ে, যদি হয়, তবে কেহ জবাব দিহিতার উর্দ্ধে থাকতে পারে না, আজ বা কাল হউক।  

বিএনপি চেয়ারপার্সনের অংশ গ্রহণ ছাড়া দলটি নির্বাচনে যাবে কি না তাহা আরো পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনার দাবী রাখে। চেয়ারপার্সন জামিনে মুক্ত হলেই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারবে না, যদি না ফৌজদারী কার্যবিধির ৪২৬ ধারা মোতাবেক তার সাজা উচ্চ আদালত কর্তৃক স্থগিত না হয়। অথবা সরকারী কোন সিদ্ধান্তে তার নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয় (!)। বিষয়টি এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চেয়ারপার্সনকে ব্যতীত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহণ যেমন হবে আতœঘাতি, অন্যদিকে বিকল্প গণতান্ত্রিক পন্থা বা পদ্ধতি নির্ধারণ করাও অত্যান্ত জরুরী। এ দুইটি বিষয় নিয়ে বিএনপি’কে একটি স্থির ও সাবলিল সিদ্ধান্তে অবশ্যই পৌছাতে হবে। ২৮/৮/২০১৮ ইং তারিখে জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের একটি সভা ড. কামাল হোসেনের বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জনসমর্থনের দিকদিয়ে তাদের দল অনেক পিছিয়ে থাকলেও রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসাবে তারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ যারা বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্র পরিচালনার KEY POINT এ ছিলেন। ডাক্তার বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিএনপি’র প্রতিষ্ঠা কালিন মহা সচিব, পরে মন্ত্রীত্ব, সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি। চুড়ান্ত পর্বে রাষ্ট্রপতি থেকে পদত্যাগ পক্ষান্তরে অপসারন, বর্তমানে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীতে শেখ হাসিনা সরকারের মূখোমুখি অবস্থান করছেন, ড. কামাল হোসেন সংবিধান প্রনেতা, আওয়ামী লীগ মনোনীত রাষ্ট্রপতি প্রার্থী, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানী সামরিক জান্তাদের বন্দী শালায় আটক, প্রধানমন্ত্রীকে দেশে ফিরিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত করা, শেষব্দি বিগত ১/১১ সরকারের প্রতি সমর্থন প্রভৃতি মিলিয়ে জাতীয় পর্যায়ে তার একটি অবস্থান রয়েছে। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী একজন সম্মূখ যোদ্ধা ছাড়াও ১৯৭৫ ইং সনের ১৫ই আগস্টের পর তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি প্রতিবাদ করে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়ে ছিলেন।আ.স.ম. আঃ রব মুক্তিযুদ্ধের আন্দোলনে সম্মূখ শারির ছাত্র নেতৃত্ব দিয়েছেন যিনি স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলনকারী হিসাবে পরিচিতি পেয়েছেন। মাহমুদুর রহমান মান্না ঐতিহ্যবাহী ডাকসুর ভি.পি. জি.এস ছাড়াও তৃতীয় ধারার রাজনীতি চালু করার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীতে অনড় রয়েছেন। তৃণমূল পর্যায়ে তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা না থাকলেও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড আছে যাদের প্রতি জনগণ আস্থা আনতে পারে। এতোদিন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া তথা বিএনপি নির্দ্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার দাবী তুলেছিল, এখন বর্ণিত ব্যক্তিদের আকুন্ঠ সমর্থনটি আরো জোরদারসহ জনগণের আস্থা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। এ ঐক্যে সরকারের গাজ্বালা ধরেছে বলে প্রতিয়মান হচ্ছে। সরকারী দলের মূখপাত্র এমনটিও বলেছেন যে, বিএনপি/জামাতের চেয়ে আওয়ামী লীগে ঘাপটি মেরে থাকা শক্ররা সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের বেশী তৎপর হয়েছে। মনে হচ্ছে গুটি কয়েক ব্যক্তির বেইলী রোডের মিটিং বেশ নাড়া দিয়েছে, কারণ গণমানুষের ভোটাধিকার আদায়ের দাবী যুক্তি সংগত এবং বর্তমানে এটা গণদাবী। ইসলাম পন্থী বড় দলগুলিও এ বিষয়ে অনড় রয়েছে।  

বিএনপি একটি উদার পন্থী দল, যাকে বলা যায় অতি উদার পন্থী। এখানে পুরুষ্কার ও তিরষ্কারের অনেক ভাটা রয়েছে। “আপন” “পড়” চেনার অনেক ঘাটতি রয়েছে। যারা দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং যারা দলের জন্য জানজীবন দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে দলের জন্য কাজ করে তাদের সকলকে একই পাল্লায় মূল্যায়ন করা হয়। অর্থাৎ ধান ও চিটা (মরা ধান) একই দরে বিক্রি হয়। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অতি উদার পন্থী দলের চেয়ারপার্সন না হয়ে যদি কোন কট্টর পন্থী দলের নেতা হতো তবে নিশ্চয় তার মুক্তির আন্দোলনের দিনক্ষন ঠিক করার জন্য ক্যালেন্ডারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো না। অতি উদারতার কারণে ১/১১ সংস্কার পন্থীদের বিরুদ্ধে দল কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় নাই। বিএনপি আইনজীবি সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়বাদী আইনজীবি ফোরাম নেত্রীর সাজা হওয়ার পর একদিনের জন্যও রাজপথে নামে নাই এবং এ জন্য কোন জবাবদিহিতাও নাই। এটাই ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। তবে এ অবস্থান থাকবে না, অবশ্যই এর অবসান হতে হবে, তাতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে ক্ষমতাসীন সরকার। কারণ শত প্রতিকুল অবস্থার মধ্যেও বিএনপি মাঠে নামার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে এবং এতো জোর জুলুম অত্যাচার করেও সরকার বিএনপি’কে ভাঙ্গতে পারে নাই। মহিলা নেত্রীরাও জেল খাটছে। তৃনমূল এখনো দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার একক নেতৃত্বের প্রতি সম্পূর্ণ আস্থাশীল। এতে এটাই প্রতিয়মান হয় যে, সরকার শত সহস্ত্র অত্যাচার নির্যাতন করেও বিএনপি’র মাথা নোয়াতে পারে নাই। তবে সরকার একতরফা নির্বাচনের পথ সুগম করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং এ জন্যই ইউনিয়ন ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মী ছাড়াও সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে পুলিশী হয়রানী করছে। সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ন্যাৎসী বাহিনী হিসাবে জনগণের প্রতিপক্ষ হিসাবে দাড় করিয়ে আইনকে ব্যবহার করে নির্যাতন করছে। তবে তৃনমূল মনে করে যে, একটি সুষ্ঠ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য খালেদা জিয়ার মুক্তিই শেষ কথা।   

একটি ঘটনার প্রতি দৃষ্টিপাত করলেই জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে সরকারের পরিকল্পনা পরিষ্কার ফুটে উঠে। সোনারগাঁও উপজেলা বিএনপি সভাপতি খোন্দকার আবু জাফর সহ অনেকেই হজ্বে থাকাবস্থায় তাদের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা দিয়েছে। ২৯/৮/২০১৮ ইং তারিখে বিএনপি চেয়ারপার্সনের মুক্তির দাবীতে রূপগঞ্জ উপজেলাধীন যাত্রামুড়া এলাকায় নারায়নগঞ্জ জেলা ওলেমা দল আয়োজিত একটি সভায় লেখক যোগদান করার জন্য উপস্থিত হলে পুলিশ সভা শুরু হওয়ার পূর্বেই ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং জেলা ওলেমা দলের সভাপতি শামছুর রহমান খাঁন বেনু, ওলেমা দল নেতা আলাউদ্দিন, আমির হোসেন এবং নাছির মেম্বারকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় এবং ২৮ জনকে আসামী করে পুলিশ কাল্পনিক মামলা রুজু করে। প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের টপ টু বটম নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে, অন্যদিকে মামলা এবং গ্রেফতার এড়াতে বিএনপি ঘর থেকেই বেরুতে পারছে না এবং সরকারের দৃষ্টিতে সরকারের মন্ত্রীরা পূর্ব থেকেই বলছে এটাই লেভেল প্লেইং ফিল্ড (!)।

আরো বলে আসছে যে, আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় না গেলে রোহিঙ্গা হয়ে যাবে। এমনো বলা হয়েছে যে, বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে তবে সরকার দলীয় নেতারা টাকা পয়সা যা কামাই করেছেন তা ফেলে রেখে দেশ ছেড়ে পালাতে হবে। ফলে এটাই প্রতিয়মান হয় যে, নিজেদের জন সমর্থন সম্পর্কে সরকারের উপলব্দি হয়েছে। যার জন্য পুনরায় ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য জনসমর্থন নয় বরং পুলিশ কর্তৃক রুজুকৃত কাল্পনিক মামলা ও নিয়ন্ত্রিত বিচার ব্যবস্থাকে পুজি করেই বিএনপির নির্বাচনী যাত্রা পথে সরকার নিজেই ব্যরিকেড সৃষ্টি করছে যার নিরব ও সরকার অনুগত দর্শক হচ্ছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন, যারা নিজেরাই একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের নিশ্চয়তা জাতির সামনে দিতে পারে নাই।  

লেখক
কলামিষ্ট ও আইনজীবি (এ্যাপিলেট ডিভিশন)   
মোবাঃ ০১৭১১-৫৬১৪৫৬
E-mail: [email protected]

এই বিভাগের আরো খবর