শুক্রবার   ২৯ মার্চ ২০২৪   চৈত্র ১৫ ১৪৩০

আকবর নগরে সামেদ-রহিমের মধ্যে রফা

প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০১৯  

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : ফতুল্লার বক্তাবলীর আকবর নগরে এলাকায় সামেদ আলী হাজী ও রহিম হাজীর মধ্যে বিগত কয়েক বছর ধরে দ্বন্ধ চলে আসছিল। এই দুইপক্ষের দ্বন্ধের জেরেই কয়েক বছর আগে টেঁটা বিদ্ধ হয়ে নির্মমভাবে খুন হয় জয়নাল। 


এই হত্যাকান্ডের মাধ্যমেই আকবরনগর এলাকায় সামেদ আলী ও রহিম হাজীর দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্ধ আরো চরমে উঠে। শুরু হয়েছিল এক পক্ষের বিরুদ্ধে আরেক পক্ষের মামলা,হামলা,বাড়ি ঘরে অগ্নি সংযোগসহ নানা অপকর্ম। বুধবার দুই পক্ষের মধ্যে আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ আপোষ করিয়ে দেন। 


এসময় ছিল বিশেষ ভুঁড়িভোজের ব্যবস্থাও। তবে এর আগেও ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শাহ মোহাম্মদ মঞ্জুর কাদের,বক্তাবলী ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলীসহ স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ সামেদ আলী ও  রহিম হাজীর মধ্যে আপোষ করিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই আপোষ আর বেশিদিন টিকেনি। 


এর পরেই জয়নাল হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছিল। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কখন আবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে এ শংকাও এলাকাবাসীর মধ্যে রয়েছে। তবে এলাকাবাসী দুই পক্ষের মধ্যে আপোষের বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখতে চাচ্ছে। 


কথায় কথায় টেঁটা যুদ্ধ হয় ফতুল্লার যে গ্রামটিতে সেই গ্রামটির নাম বক্তাবলীর আকবর নগর। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে প্রায় ২০ বছর আগে থেকে এই এলাকাটিতে শুরু হয়েছিল হত্যা,লুটপাট,বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা। 


প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে  এলাকার প্রতিটি ঘরে টেঁটা মজুদ করে রাখা নেশা তাদের। এই গ্রামে সামেদ আলী হাজী ও রহিম হাজীর মধ্যে থেমে থেমে দ্বন্ধ সংঘাত শুরু হলে আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের অনেকে দুই পক্ষের থেকে সুবিধা গ্রহণ করতো বলে অভিযোগ। 


বুধবার বিকেলে সামেদ আলীর বাড়িতে  ভুঁড়িভোজের আয়োজন করা হয়। এসময় তার বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আসলাম হোসেন,ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাইফ উল্লাহ বাদল,সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী,ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল্লাহ,জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী,মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শাহ নিজাম,এনায়েত নগর ইউনিয়ন পরিষদের  চেয়ারম্যান মো.আসাদুজ্জামান প্রমুখ। এসময় রহিম হাজী ও তার পক্ষের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।  


বৈঠকে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক শওকত আলী বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছিল এতে উভয় পক্ষই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাদের উচিত হবে পূর্বের শত্রুতা ভুলে গিয়ে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য হলেও দ্বন্ধ সংঘাত ভুলে এই গ্রামটিকে একটি আদর্শ গ্রাম হিসেবে গড়ে তোলা। 
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শাহ নিজাম বলেন,আপনাদের সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে মারামারি বন্ধ করতে হবে। সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মামলা তুলে নিতে পুলিশকে সবধরনের সহযোগিতা করার আহবানও জানান তিনি।


ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ  মো.আসলাম  হোসেন বলেন,তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে যে সংঘাতের সৃষ্টি হয়,আজকের পর থেকে তারা আর তা করবে না বলে আশা করি। আকবর নগরকে একটি আদর্শ গ্রাম হিসেবে গড়ে তুলতে পুলিশের আন্তরিকা থাকবে। 


এ ব্যাপারে আকবর নগর এলাকার বেশ কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,সামেদ আলী ও রহিম হাজীকে ভাঙ্গিয়ে খেতে আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন নেতা তাদের মধ্যে দ্বন্ধ লাগিয়ে রাখতেন। আর তারাও না বুঝে মারামারির ঘটনা এলাকায় ঘটিয়ে যেতো। এলাকায় দ্বন্ধ থাকলে বিশেষ কিছু ব্যাক্তিও লাভবান হতেন। 


কখনো এই পক্ষ আবার কখনো ঐ পক্ষের থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া ছিল অনেকের কাজ। এবার দুই পক্ষ যে ভাবে আপোষ হলেন,যদি তা ঠিক থাকে তাহলে গ্রামটি আসলেও সুন্দর হবে।  

এই বিভাগের আরো খবর